স্বত্ব © 2024 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
নিজস্ব প্রতিবেদক
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করতে দেশীয় উৎসের তহবিলের পাশাপাশি বৈদেশিক তহবিল সংগ্রহের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের প্রবণতা বৃদ্ধি পেলে বিদেশী ঋণ বিতরণ বাড়বে, যা প্রকৃতপক্ষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি সমৃদ্ধ করবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), এনবিআর এবং অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি বৈদেশিক তহবিল এবং বৈদেশিক ঋণ ব্যবহৃত হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। মান্নান বলেন, উন্নয়ন সহযোগি যেমন বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং জাইকা বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু সরকার কেবলমাত্র তার প্রয়োজন মোতাবেক ও সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা নেবে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক বৈদেশিক সহায়তা বর্তমানে পাইপলাইনে রয়েছে
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আজ একনেক সভায় মোট ১৬টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়, যার বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ১১ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ১১ হাজার ৪৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। অনুমোদন পাওয়া ১৬ প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন এবং ৮টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আরও কিছু নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষকে মূল্যস্ফীতির ভোগান্তি থেকে রেহায় দিতে প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি মনোযোগি হওয়ার কথা বলেছেন। সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষি সেচের পুরোটা পর্যায়ক্রমে সৌরচালিত পাম্পের মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। সে বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি। সৌর প্যানেলের উচ্চতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করে শেখ হাসিনা বলেন, যেন সৌর প্যানেলের নীচের জমিতে পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, মাছ চাষসহ সবজি চাষ করা যায়। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাত সোলার প্যানেল স্থাপনে এগিয়ে এলে, সরকার কর সুবিধাদিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। বর্ষাকালে হাওর অঞ্চলে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষের মৃত্যু হয় উল্লেখ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাওর এলাকায় কিছু শেড নির্মাণের জন্য কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বিসিএস কর একাডেমির অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে কম জমি ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়নকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ প্রদান করেন । সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকা উচিত। সরকার সবর্তোভাবে সে বিষয়ে সচেতন। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, দেশীয় উৎসের তুলনায় বিদেশী ঋণের সুদহার কম হওয়ায় বিদেশী অর্থায়ন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সরকার তার সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু করতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদেশী ঋণ ও জিডিপি অনুপাত এখনও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম, যেকারণে আমরা আরও বেশি বিদেশী ঋণ নিতে পারি। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড সফর সফল হওয়ায় অভিনন্দন জানানো হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২ জরিপের ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করা হয়। তিনি গড় আয়ু, স্বাক্ষরতার হার, নিরাপদ পানি পানের সুযোগ বৃদ্ধিসহ প্রকাশিত ফলাফলের বিষয়ে প্রশংসা করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প দেশের গৃহহীন মানুষকে অনেক সাহায্য করেছে, যা দেশে দারিদ্রতা কমাতে সহায়তা করছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, গরীব মানুষ উপকৃত হয় এমন প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশন অগ্রাধিকার দেবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়ে মান্নান বলেন, বর্তমান সময়ে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। একইসাথে আমদানি-রপ্তানি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম স্থিতিশীল থাকায় আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, বিদেশি ঋণের মূল অর্থ ও সুদ পরিশোধে বাংলাদেশ কখনোই খেলাপি হয়নি। একনেক সভায় ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইমপ্রুভিং আরবান গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার (আইইউজিআইপি)’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ৮টি বিভাগের ৪৮টি জেলার আওতাধীন ৮৭টি উপজেলার প্রায় ৮৮টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ’ প্রকল্প, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিএস (কর) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যানসেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাসড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ’ ও ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পথচারী আন্ডারপাস’ প্রকল্প, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনের স্টেশনগুলোর সিগনালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ’ প্রকল্প, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘ইকোনমিক এক্সেলারেশন অ্যান্ড রেজিল্যান্স ফর এনইইটি (ইএআরএন)’ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ’ প্রকল্প। আর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৭টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নীতকরণ (সেক্টর)’ প্রকল্প, ‘ইমপ্রভিং আরবান গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার (আইইউজিআইপি)’ প্রকল্প, ‘রুর্যাল কানেকটিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি)’ প্রকল্প, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প, ‘গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার-চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প, ‘রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প এবং ‘নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।
সূত্রঃ বাসস
সোমবার বিকালে উপজেলার জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি যাত্রীসহ উল্টে যায়।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি মো. আলিম হোসেন শিকদার হতাহতের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের নিচে এখনো মানুষ চাপা পড়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত কোচগুলোতে অনেকেই আহত অবস্থায় পড়ে আছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খান জানান, ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস গোধূলি ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার পর পরই স্টেশনের আউটারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল না মানায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে মালবাহী ট্রেনটি ‘সিগন্যাল না মানায়’ এ সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালিত হয় এ উৎসব। ঈদুল আযহা কোরবানির ঈদ হিসেবেও পরিচিত। কোরবানি শব্দটির অর্থ ত্যাগ ও নৈকট্য। মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করাই মূলত ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদের তাৎপর্য।কোরবানির ইতিহাস সুপ্রাচীন। প্রায় চার হাজার বছর আগে হজরত ইব্রাহিম (আ) স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার জন্য মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশ পেয়েছিলেন। হজরত ইব্রাহিম (আ)-এর জীবনে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ)। আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য তিনি তার প্রিয়তম পুত্রকেই কোরবানি করার প্রস্তুতি নেন। তিনি পুত্রকে মহান আল্লাহর নির্দেশের কথা জানান এবং পুত্র সানন্দে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে সম্মত হন। পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। এ ঘটনার অন্তর্নিহিত বাণী স্রষ্টার প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য ও ত্যাগ স্বীকারের মধ্যেই ঈদুল আযহার এই আনন্দ নিহিত। তাই ঈদুল আজহা ত্যাগের মহিমায় ক্ষুদ্রতা ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়।এরই সূত্র ধরে গোটা মুসলিম জাহানে আজও চলে আসছে কোরবানির এই ধারা। এর ভেতর দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে অগ্রসর হয় মুসলিম জাতি।কোরবানি মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যাঁদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাঁদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব।পশু কোরবানির মাধ্যমে গরিব-দুঃখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য স্বার্থত্যাগ, আত্মত্যাগ ও সম্পদত্যাগই হলো কোরবানি। কোরবানি শুধু একটি আনন্দ-উৎসব নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা ও দর্শন। ঈদুল আযহা আত্মত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত এক অনন্য আনন্দ উৎসব। যে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণ মূর্ত হয় মানুষের জীবনে, তার জন্য চরম ত্যাগ স্বীকারের এক প্রতীকী আচার এই কোরবানি।ঈদুল আযহার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিজের অহমিকা ও উচ্চাভিলাষ উৎসর্গ করা। পশু কোরবানির ভেতর দিয়ে মানুষের ভেতরে থাকা পশুশক্তি, কাম-ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুকেই ত্যাগ করতে হয়। তাই শুধু পশু নয়, প্রয়োজন পশুত্বের কোরবানি। কোরবানিদাতা শুধু পশুর গলায় ছুরি চালান না, তিনি তাঁর সব কুপ্রবৃত্তির ওপরও ছুরি চালিয়ে তাকে নির্মূল করেন। এটাই হলো কোরবানির মূল শিক্ষা। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে এ অনুভূতি অবশ্যই প্রয়োজন।এমন একসময়ে ঈদুল আযহা উদযাপিত হতে যাচ্ছে, যখন সমাজ ক্রমেই অস্থিরতা ও নিষ্ঠুরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই সংঘাত-সংঘর্ষের মনোবৃত্তি ত্যাগ করে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সব ক্ষেত্রে ত্যাগের মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।রাজধানী’সহ সারা দেশে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ বন্যাপীড়িত। অনেক ঈদগাহ হয়তো পানির নিচে তলিয়ে আছে। ওই সব এলাকার মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা স্মরণ করে মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরির অঙ্গীকার করতে হবে।বিত্তবৈভবের প্রতিযোগিতা ও মহড়া না দেখিয়ে দুস্থ ও দুর্গত মানবতার পাশে দাঁড়ানো এ সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় সেবার মানসিকতা নিয়ে দাঁড়াতে হবে দুস্থ ও আর্তমানুষের পাশে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহার ত্যাগের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবজাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামীকাল ঈদুল আজহার উৎসব উদযাপিত হবে। ঈদুল আজহার প্রাক্কালে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম, পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদ আবারো আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে এক বছর পর। কোরবানির অর্থ ত্যাগ। ক্ষুদ্রতা, নীচতা, অহংকার ও স্বার্থপরতা ত্যাগের মাধ্যমে কোরবানীর ঈদ অর্থবহ হয়ে ওঠে।’ তিনি বলেন, ‘ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে আসুন আমরা মানবজাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করি এবং বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন বজায় রেখে আমাদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। বার্তার শেষ দিকে তিনি বলেন, সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন, সুস্থ থাকুন, খোদা হাফেজ, ঈদ মোবারক। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন।
সূত্রঃ ঢাকা,বাসস
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় আবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হচ্ছে। আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটির পর, প্রথম কর্মদিবস থেকে নতুন এ অফিস সময়সূচি কার্যকর হবে। আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।বাংলাদেশে স্বাভাবিক সময়ে অফিস চলত সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। কিন্তু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত করা হয়। এখন আবার আগের সময়ে ফিরছে অফিস সময়।এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অফিস চলবে। তবে দুপুর একটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য বিরতি থাকবে। আর শুক্রবার ও শনিবার ছুটি থাকবে। এখন কী কারণে অফিস সময় পুননির্ধারণ করা হলো, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটিই তো স্বাভাবিক ছিল। দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ হবে। পাঁচদিনে ৪০ ঘণ্টা। এতদিন ৩৫ ঘণ্টা কাজ হতো, কিন্তু সেটি বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। এখন আবার মূল অবস্থায় আসা হলো।
মাহবুব হোসেন বলেন, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে শাহবাগ থানা স্থানান্তরিত হচ্ছে। এখন শাহবাগ থানার নতুন ঠিকানা হবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী রমনা মৌজার সাকুরা রেস্টুরেন্ট এলাকায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের জন্য এটি সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রমনা মৌজার ৩৫ নম্বর দাগে ৩৯ দশমিক ৭ শতক জমি আছে সেই জায়গায় হবে শাহবাগ থানা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুবিধার্থে ওই জায়গাটি (শাহবাগ থানার বর্তমান জায়গা) তাদের দরকার। তারা উপস্থাপন করেছে এ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যে সমন্বয় করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তারা একমত হতে পারছিলেন না। সে জন্য মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে এবং মন্ত্রিসভা নির্দেশনা দিয়েছে। কতদিনের মধ্যে স্থানান্তর হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে।
এ ছাড়া আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইনের খসড়া, জাতীয় জীবনিরাপত্তা নীতি-২০২৪ এর খসড়াসহ আরও কয়েকটি বিষয় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সূত্র:বাসস