স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
জুয়েল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের মাসিক সভা থেকে ৮ সদস্যকে বের করে দিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। ইচ্ছেমতো প্যানেল চেয়ারম্যান বানানো এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রকল্প গ্রহণ ও অর্থ বণ্টনের রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করায় তাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। গতকাল পরিষদের তৃতীয় মাসিক সভায় এ ঘটনা ঘটে। পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সভার শুরুতে দ্বিতীয় সভায় স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নেয়া সিদ্ধান্তের রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তাদের বলেন । এতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান তাদের সভা থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় দেড়টায়। এরপর মিনিট ১৫ সভায় অংশগ্রহণ ছিল ৮ সদস্যের। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে ওই সদস্যদের মন্ত্রণালয়ে করা অভিযোগের নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের কথা বলেন। এ নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে তার তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই সদস্যরা সভা ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন। এদিকে সভাকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদে এক ইন্সপেক্টর ও ২ সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে মোট ১৫/২০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ জানান, মিটিংয়ে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান আমাদের বলেন আমরা নাকি উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রদের অপমান করার জন্যে লজ্জাকর ইতিহাস তেরি করেছি।এটি নিন্দনীয় কাজ হয়েছে বলে তিনি আমাদেরকে এ ব্যাপারে নিন্দা জানাতে বলেন। এ সময় আমরা নিন্দার বিষয়টি বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানকে আমাদের কথা শুনতে বলি। তখন চেয়ারম্যান বলেন, কথা বলতে চাইলে আগে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেন, না হলে বেরিয়ে যান। আপনাদের মিটিংয়ে অ্যাটেন্ড করার দরকার নেই। যেহেতু আমাদের কথা বলতে দেবে না, আর ইতিপূর্বে প্যানেল চেয়ারম্যান ও বরাদ্দে বণ্টনের বিষয়ে চেয়ারম্যানের ইচ্ছেমতো নেয়া রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলা হচ্ছে, আমরা সেটি না করে বেরিয়ে আসি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা থেকে নির্বাচিত পরিষদ সদস্য বাবুল মিয়া বলেন, মিটিংয়ে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান বিগত মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমাদের স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমাদের কোনো কথা শুনতে চাইছিলেন না। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের বাকবিতণ্ডা হয়। চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নিন্দা প্রস্তাব দিতে বলেন। আমরা এরও প্রতিবাদ করি। এছাড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তার নিজ ক্ষমতা বলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রদের ৪ লাখ টাকা করে এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ৩ লাখ টাকা করে বরাদ্দ বিভাজন করেন। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উন্নয়ন প্রকল্পের চাহিদা প্রদানের একটি ফরম ছাপিয়ে বণ্টন করেছেন। এ ছাড়া কোনো অনুমোদন ছাড়াই ৮/১০ লাখ টাকায় ৩ হাজার কম্বল ক্রয় করেন। এর আগে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব বরাবর চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন পরিষদের ৮ সদস্য। তারা হচ্ছেন- আখাউড়ার সাইফুল ইসলাম, সরাইলের পায়েল হোসেন মৃধা, নাসিরনগরের সামসুল কিবরিয়া, আশুগঞ্জের বিল্লাল মিয়া, বাঞ্ছারামপুরের আবুল কালাম আজাদ, বিজয়নগরের বাবুল আক্তার, সদর উপজেলার বাবুল মিয়া ও সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ।এতে অভিযোগ করা হয়, গত ১লা জানুয়ারি পরিষদের দ্বিতীয় সভায় বরাদ্দ বিতরণ নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন চেয়ারম্যান। পরিষদের প্রথম সভায় সকল সদস্যদের মতামত বা ভোটগ্রহণ ছাড়া তার অনুসারী ৩ সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। তাছাড়া সদস্যদের পাশ কাটিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন নিজেই। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রকাশ্যেই বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনের ভোটার উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এটিপ্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে সদস্যরা তাদের অভিযোগে বলেন, জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০২২ অনুযায়ী জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ/পৌরসভা সমূহের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রগণকে পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদের রাজস্ব ও এডিপি বরাদ্দ স্থানীয় সরকারের ওই সকল চেয়ারম্যান ও মেয়রের অনুকূলে বিভাজন করার কোনো বিধান রাখা হয়নি।
রাজনীতিতে সময় ও পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে অনেক চরিত্রই তাদের অবস্থান বদল করে। ঠিক তেমনি, আওয়ামী লীগের প্রাক্তন অর্থ দাতা ও সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীর কেশিয়ার এবং প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার হাজী মোস্তফা কামাল (মস্তু) আজকে বিএনপির ছত্রছায়ায় আছেন। বহু বছর ধরে আওয়ামী লীগে তার অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য, বিশেষত দলের আর্থিক সহায়তায় তার ভূমিকা ছিল প্রসিদ্ধ। তার সাথে কামিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মস্তু তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছেন এবং এখন বিএনপির দিকে আশ্রয় নিচ্ছেন।
সূত্র বলছে, সাবেক মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীকে বাবা বলে সম্মোধন করে আওয়ামী লীগের বিগত দিনের পথচলা তার। মুস্তু গত ৫ আগষ্ট এর পর থেকে রাজনৈতিক অবস্থানে পরিবর্তন আনলেও তার ব্যবসায়ী যোগাযোগ ও প্রভাব কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো ছেদ পড়েনি। তার পাশাপাশি তার পরিবারের লোকজনও বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন। তার এই পরিবর্তিত অবস্থান দলীয় নীতির প্রতি আস্থাহীনতার পাশাপাশি, ব্যক্তি স্বার্থ এবং রাজনৈতিক প্রভাবের জন্যও হতে পারে। দলের উত্থান-পতনের সঙ্গেও তার সম্পর্ক অটুট। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলমান সমালোচনা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনে তিনি এখন বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন বলে জানা যাচ্ছে। সচেতন মহল মনে করছেন, মুস্তুর মতো শক্তিশালী ব্যক্তির রাজনৈতিক পক্ষ পরিবর্তন সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই দেখা হয়। বিশেষ করে দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বের মধ্যে মুস্তুর এই নতুন রাজনৈতিক কৌশল তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সুবিধাবাদী কিছু নেতা তাদের স্বার্থের জন্য এমন কিছু লোকদের দল থেকে সুবিধা দিয়ে থাকেন। তাদের সাথে দলের মূলধারার কোন নেতাদের যোগাযোগ নেই।
জুয়েল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাওলানা শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া (৩৬) নামে এক ইসলামি বক্তার ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আসাদুল ইসলাম গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী ও তার অনুসারীরা আখাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে শনিবার রাত ৯টায় উপজেলার আজমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক। তিনি সদর উপজেলার চাপুইর গ্রামের মাওলানা আব্দুর রশিদ ভূঁইয়ার ছেলে।
জানা যায়, শনিবার রাতে বিজয়নগরের দৌলতবাড়ি এলাকায় মাহফিলে অংশ নেন মাওলানা শরিফুল। মাহফিলে শিয়াদের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন তিনি। মাহফিল শেষে মধ্যরাতে পরিচিত জনের মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে আজমপুর রেলস্টেশন এলাকায় আসলে অজ্ঞাত কয়েক যুবক তার মোটরসাইকেলটির গতি রোধ করে হামলা চালায়। এ সময় শরিফুলের জিহ্বা ও ঠোঁটের অনেকটা অংশ কেটে যায়। তাছাড়া লাঠিসোঁটা দিয়ে তাকে মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। এ সময় মোটরসাইকেলে মাওলানা শরিফুলের সঙ্গে থাকা ওবায়দুল্লাহ (৩৪) নামে আরও একজন আহত হয়। এ সময় তিনি চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার দুপুরে শ্রীপুর ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন। আখাউড়া থানার ওসি আসাদুল ইসলাম বলেন, মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী হুজুরসহ তার অনুসারীরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে আখাউড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। হামলাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে এবং পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় আদালতের মালখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সেই কর্মকর্তাকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
শাহাদাত হোসেন সোহেল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ১০০ কেজি গাঁজা ও একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকাসহ ৪ জনকে আটক করেছে কসবা থানা পুলিশ।
কসবা থানার পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পিপিএম এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ দল, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ময়দাগঞ্জ বাজারের উত্তর পাশে তিতাস নদীর ঘাটে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২:৫০ সময় জহর লাল চন্দ্র দাশ (৫৬), সিরাজ মিয়া (৫৫), মো.তুষার (১৮), মো. শহীদ (৫০) এদের কে ১০০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ও একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা জব্দ করে।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পিপিএম জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ করাসহ আইনআনুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।