স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
মো. রুবেল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মাজেদা বেগমের তৈরি নানান রকমের শতাধিক রকমের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসছেন পিঠা প্রিয় মানুষজন। উপজেলার বাহেরচর বাজারের পিঠা দোকান কেন্দ্র করে কাস্টমারদের সমাগমে দৈনিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হয় তার দোকানে। মাসে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার পিঠা বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।মাজেদা বেগমের বয়স ৫০ ছুই ছুই, দীর্ঘ ৯বছর যাবৎ স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে চিতই পিঠা বানিয়ে সংসার চালান। অভাবে সংসারে ৫ মেয়ে ও দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে কোনরকম দিন কাটে। প্রতিদিন ৮টি চুলায় ১ হাজারেরও বেশি চিতই পিঠা তৈরি করেন। প্রতিটি চিতই বিক্রি হয় ১০ টাকায়। তবে ডিম ও মসলাসহ স্পেশাল ডিম পিঠা বিক্রি হয় ৩০ টাকায়। পিঠার সঙ্গেই ১০০ পদের ভর্তা ফ্রি দেয়া হয়। যার যতবার খুশি ভর্তা নিতে পারবে। ১০০ পদের ভর্তা বানানোর জন্য ১২-১৩ রকমের শুঁটকি, বিভিন্ন রকমের মাছ, কয়েক রকমের ডাল, বাদাম, ধনেপাতা, মরিচ, মৌসুমি সবজি ব্যবহার করেন তিনি।অভিনব কায়দায় কাস্টমারদের পিঠার প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলার জন্য মাজেদা বেগম কাস্টমারদের দিকে পিঠা ছুড়ে মারে, সেই পিঠা কাস্টমাররা ক্যাচ নিয়ে সানন্দে বিভিন্ন পদের ভর্তা মিশিয়ে খেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। তার এই চিতই পিঠার দোকানকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ৫০-১০০ জন মানুষের জটলা লেগে থাকে। আড়াইহাজার থেকে পিঠা খেতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় চিতই পিঠা পাওয়া গেলেও ১০০ পদের ভর্তা পাওয়া যায় না। তাই আমরা নানান রকমের ভর্তার স্বাদ নিতেই আমরা এখানে আসছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাজেদা আপার পিঠা বানানো দেখে বন্ধুবান্ধবসহ এসেছি।পার্শ্ববর্তী নরসিংদী উপজেলা থেকে পিঠা খেতে আসা ইমরান হোসেন বলেন, আমরা পাঁচটি মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে এখানে পিঠা খেতে এসেছি। বাঞ্ছারামপুরের ফেসবুক বন্ধুর পোস্টের মাধ্যমে ৯০ থেকে ১০০ পদের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খাওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। চিতই পিঠা দিয়ে টাটকা ভর্তার স্বাদ বেশ ভালই লেগেছে।মাজেদা বেগমের স্বামী মোঃ রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমার পাঁচ মেয়ে, নয় বছর যাবত পিঠা বানানোর ব্যবসা করে দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, তিন মেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। আমাদের সংসার ভালই চলতেছে আমরা বেশ আনন্দে আছি। অনেক থানার মানুষ আমার এখানে পিঠা খেতে আসে। মানুষ আনন্দ পায় আমরাও বেশ সুখে আছি। মাজেদা বেগম বলেন, আগে পরিবারে অভাব-অনটন ছিল। এখনকার অবস্থা অনেক ভালো। ৩ বছর ধরে তার পিঠার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। তবে নয় বছর যাবৎ আমি পিঠা বিক্রি করছি। আমি প্রথমে ৫০০০ টাকা বুজি নিয়ে পিঠা বিক্রি শুরু করলেও এখন আমি বেশ ভালো আছি। নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ,হোমনা,দাউদকান্দিসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ পিঠা খেতে আসে। শুক্রবারে ভিড় থাকে বেশি। শুক্রবারের দ্বিগুণ চালের পিঠা বিক্রি হয়।
আদিত্য কামাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে উদ্ধারকৃত অর্ধগলিত অজ্ঞাতনামা নারীর (৪০) লাশ দাফন করেছে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ নামের একটি সংগঠন।নবীনগর থানা পুলিশের কাছ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন লাশ গ্রহণ করে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বাদ জুম্মা জানাজার নামায পর মেড্ডা তিতাস নদীর পাড়ের বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে দাফন করেন।গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) নবীনগরের পৌরসভার মাঝিকাড়া গ্রামের একটি ডোবায় এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহটি কয়েকদিন পানিতে থাকার কারণে মহিলার শরীরে পচন ধরে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য অজ্ঞাত মহিলার লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম জানান, অজ্ঞাতনামা নারীর পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে বেওয়ারিশ লাশ দাফনকাজের সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিনকে লাশ দাফনের চিঠি পাঠায়। তিনি অজ্ঞাত মরদেহটি গ্রহণ করে শুক্রবার জুম্মার পর জানাজার নামায শেষে মেড্ডা তিতাস নদীর পাড়ের বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে দাফন করেন।উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর বেওয়ারিশ লাশ দাফনকাজ ও মানবিক কাজ দিয়ে জেলায় সবার চেয়ে এগিয়ে। তারা জেলায় টেলি-মেডিসিন সেবা, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা ও ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে রক্তদান করে যাচ্ছে। যা এই প্রথম কোন সংগঠন এত গুলো কাজ করছে। এখন পর্যন্ত ১২৭টি বেওয়ারিশ লাশ দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে বাতিঘর।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে লন্ডন থেকে আজ ঢাকায় পৌঁছেছেন।প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট (বিজি-২০৮) আজ বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী বিমানের প্রতিটি কোনায় ঘোরাফেরা করেন। তিনি যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন।প্রধানমন্ত্রী যাত্রীদের সঙ্গে বেশকিছু সময় কাটান। এই সময় কয়েকজনকে প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং তাঁর সাথে সেলফি তোলেন। কয়েকজন নারী যাত্রীকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরতেও দেখা গেছে।এর আগে বিমানটি লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে (লন্ডন সময়) যাত্রা করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান।লন্ডনে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শেখ হাসিনা বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে দেয়া এক সংবর্ধনায় যোগদেন এবং বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ে গঠিত এপিপিজি’র সভাপতি এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপি’র নেতৃত্বে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) একটি প্রতিনিধিদলসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।নিউইয়র্কে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ১৭-২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন এবং এর ফাঁকে অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে শেখ হাসিনা ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। সুত্রঃ বাসস
জুয়েল মিয়া
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর উন্নয়ন ও সরাইল-ধরখার-আখাউড়া বন্দর পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। সোমবার(২৪জুলাই) দুপুরে প্রকল্প পরিদর্শনে এসে প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘প্রকল্পটি আমাদের দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ করবে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ’আজ এখানে এসেছি ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের মাধ্যমে চার লেনের জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের কাজের গতিবিধি কেমন চলছে দেখার জন্য। প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে আমাদের আরও কি করণীয়, এই পরিদর্শনে সহজে বুঝতে পারব। সামনের দিনগুলোতে আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে বিবেচনায় আমরা চেষ্টা করছি প্রকল্পের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে।’ তিনি আরও বলেন, ’আমি খুবই খুশি, এখানকার সাধারণ মানুষজন খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা করেছেন; যেন আমরা প্রকল্পের কাজ সুন্দরভাবে শেষ করতে পারি।’ প্রকল্প পরিদর্শনের সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।এর আগে দুপুরে ভারতীয় হাইকমিশনার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর হয়ে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দরে এসে পৌঁছান। এ সময় আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করতে দেশীয় উৎসের তহবিলের পাশাপাশি বৈদেশিক তহবিল সংগ্রহের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের প্রবণতা বৃদ্ধি পেলে বিদেশী ঋণ বিতরণ বাড়বে, যা প্রকৃতপক্ষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি সমৃদ্ধ করবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), এনবিআর এবং অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি বৈদেশিক তহবিল এবং বৈদেশিক ঋণ ব্যবহৃত হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। মান্নান বলেন, উন্নয়ন সহযোগি যেমন বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং জাইকা বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু সরকার কেবলমাত্র তার প্রয়োজন মোতাবেক ও সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা নেবে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক বৈদেশিক সহায়তা বর্তমানে পাইপলাইনে রয়েছে
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আজ একনেক সভায় মোট ১৬টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়, যার বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ১১ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ১১ হাজার ৪৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। অনুমোদন পাওয়া ১৬ প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন এবং ৮টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আরও কিছু নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষকে মূল্যস্ফীতির ভোগান্তি থেকে রেহায় দিতে প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি মনোযোগি হওয়ার কথা বলেছেন। সৌরবিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষি সেচের পুরোটা পর্যায়ক্রমে সৌরচালিত পাম্পের মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। সে বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি। সৌর প্যানেলের উচ্চতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করে শেখ হাসিনা বলেন, যেন সৌর প্যানেলের নীচের জমিতে পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, মাছ চাষসহ সবজি চাষ করা যায়। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাত সোলার প্যানেল স্থাপনে এগিয়ে এলে, সরকার কর সুবিধাদিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। বর্ষাকালে হাওর অঞ্চলে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষের মৃত্যু হয় উল্লেখ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাওর এলাকায় কিছু শেড নির্মাণের জন্য কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বিসিএস কর একাডেমির অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে কম জমি ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়নকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশ প্রদান করেন । সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকা উচিত। সরকার সবর্তোভাবে সে বিষয়ে সচেতন। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, দেশীয় উৎসের তুলনায় বিদেশী ঋণের সুদহার কম হওয়ায় বিদেশী অর্থায়ন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সরকার তার সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু করতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদেশী ঋণ ও জিডিপি অনুপাত এখনও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম, যেকারণে আমরা আরও বেশি বিদেশী ঋণ নিতে পারি। একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড সফর সফল হওয়ায় অভিনন্দন জানানো হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২ জরিপের ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করা হয়। তিনি গড় আয়ু, স্বাক্ষরতার হার, নিরাপদ পানি পানের সুযোগ বৃদ্ধিসহ প্রকাশিত ফলাফলের বিষয়ে প্রশংসা করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প দেশের গৃহহীন মানুষকে অনেক সাহায্য করেছে, যা দেশে দারিদ্রতা কমাতে সহায়তা করছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, গরীব মানুষ উপকৃত হয় এমন প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশন অগ্রাধিকার দেবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়ে মান্নান বলেন, বর্তমান সময়ে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। একইসাথে আমদানি-রপ্তানি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম স্থিতিশীল থাকায় আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, বিদেশি ঋণের মূল অর্থ ও সুদ পরিশোধে বাংলাদেশ কখনোই খেলাপি হয়নি। একনেক সভায় ৬ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইমপ্রুভিং আরবান গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার (আইইউজিআইপি)’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ৮টি বিভাগের ৪৮টি জেলার আওতাধীন ৮৭টি উপজেলার প্রায় ৮৮টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ’ প্রকল্প, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘বিসিএস (কর) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম পর্যায়)’ প্রকল্প, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যানসেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাসড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ’ ও ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পথচারী আন্ডারপাস’ প্রকল্প, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনের স্টেশনগুলোর সিগনালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ’ প্রকল্প, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘ইকোনমিক এক্সেলারেশন অ্যান্ড রেজিল্যান্স ফর এনইইটি (ইএআরএন)’ প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ’ প্রকল্প। আর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৭টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নীতকরণ (সেক্টর)’ প্রকল্প, ‘ইমপ্রভিং আরবান গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার (আইইউজিআইপি)’ প্রকল্প, ‘রুর্যাল কানেকটিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি)’ প্রকল্প, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প, ‘গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার-চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প, ‘রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্প এবং ‘নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।
সূত্রঃ বাসস
নিজস্ব প্রতিবেদক
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। গত বছর সারাদেশে কোরবানিকৃত গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। গত বছরের তুলনায় এবার ৩ লাখ ৬৭ হাজার ১০৬টি গবাদিপশু বেশি কোরবানি দেওয়া হয়েছে।এ বছর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।
মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ২৯ হাজার ১৮২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৫২০টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪ লাখ ২৬ হাজার ১১১টি, খুলনা বিভাগে ১০ লাখ ৮ হাজার ৮৫৫টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৮টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪২টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৩টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৫১৭টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
কোরবানি হওয়া গবাদিপশুর মধ্যে ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৯টি গরু, ১ লাখ ১২ হাজার ৯১৮টি মহিষ, ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ৭১৯টি ছাগল, ৪ লাখ ৭১ হাজার ১৪৯টি ভেড়া এবং ১ হাজার ২৭৩টি অন্যান্য পশু।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫৪টি গরু, ৬ হাজার ৪৬৫টি মহিষ, ১০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭২টি ছাগল, ৮৯ হাজার ৯১টি ভেড়া ও অন্যান্য ৮শ’টি পশু, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৭টি গরু, ৯১ হাজার ৮১০টি মহিষ, ৬ লাখ ৫২ হাজার ১৩০টি ছাগল, ৯৫ হাজার ৪৮৩টি ভেড়া ও অন্যান্য ৩৫০টি পশু।
রাজশাহী বিভাগে ৭ লাখ ২০ হাজার ৪৭২টি গরু, ৯ হাজার ৫৬৮টি মহিষ, ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৪৮৬টি ছাগল ও ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৭টি ভেড়া, অন্যান্য পশু ৮টি, খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬৭টি গরু, ১ হাজার ৫০৬টি মহিষ, ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭৩৫টি ছাগল, ৫৭ হাজার ৫৫৯টি ভেড়া ও অন্যান্য ৮৮টি পশু। বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৮০ হাজার ৩৭৭টি গরু, ১ হাজার ১টি মহিষ, ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৩টি ছাগল ও ২০ হাজার ১৯০টি ভেড়া, অন্যান্য পশু ৭টি। সিলেট বিভাগে ২ লাখ ১ হাজার ১৪৩টি গরু, ১ হাজার ৩৫৮টি মহিষ, ১ লাখ ৭৩ হাজার ২২৩টি ছাগল ও ১৮ হাজার ১৪টি ভেড়া, অন্যান্য পশু ৪টি। রংপুর বিভাগে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৪ টি গরু, ৩০৪টি মহিষ, ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৬১৬টি ছাগল, ৬০ হাজার ২২৮টি ভেড়া, অন্যান্য পশু ১১টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৯০ হাজার ৮০৫টি গরু, ৯০৬টি মহিষ, ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৯৪টি ছাগল ও ১৮ হাজার ৭টি ভেড়া, অন্যান্য পশু ৫টি কোরবানি দেওয়া হয়েছে। সূত্র বাসস