স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের জঘন্য হামলার বিরুদ্ধে নীরব থাকায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, ফিলিস্তিনের ওপর বারবার হামলা আর সহ্য করা যায় না।তিনি বলেন, ‘আমি দেখি অনকেই (বিএনপি) চুপ থাকেন। কারণ যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা যদি আবার নাখোশ হয়। তাই যারা নির্যাতিত তাদের কথা বলার সাহস নাই। আর তারা আন্দোলন করে পদত্যাগের ডাক দেয়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ সড়ক ভবনে সারাদেশের ৮টি বিভাগের ৩৯টি জেলায় একযোগে নবনির্মিত দেড়শ’ সেতু এবং ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে, আমরা শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা জীবন দিয়ে দেখেছি। ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনের ওপর হামলা করে বিশেষ করে হাসপাতালে হামলা করে শিশু, নারী এবং মানুষ হত্যা করেছে আমরা তার নিন্দা জানিয়েছি । আমাদের কথা হচ্ছে দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আর ফিলিস্তিনবাসী তাদের ভূমি যেন তারা ফেরত পায়। যে জায়গাগুলো দখল হয়ে গেছে সেগুলো তাদের ফেরত দিতে হবে।শেখ হাসিনা বলেন, বোমা মেরে মানুষ-শিশু হত্যা করা হল, রক্তাক্ত শিশুদের সেই চেহারা সহ্য করা যায়না। সেজন্য আগামী শুক্রবার আমি সকলকে অনুরোধ করবো জুম্মার পর দেশের প্রতিটি মসজিদে এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেন দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। কেননা শুধু মুসলিম নয়,হতাহতদের মধ্যে অন্য ধর্মবলম্বীরাও রয়েছে। আর শনিবার আমরা শোকদিবস ঘোষণা করেছি, সেদিন আমাদের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের যেসব নারী ও শিশুসহ জনগণ এখন কষ্ট পাচ্ছে তাদের জন্য আমরা ওষুধসহ শুকনো খাবার এবং শিশু ও নারীদেও জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য আমরা পাঠাব। কারণ আমাদের যেটুকুই সম্পদ তা নিয়ে আমরা সবসময় দুর্গত মানুষের পাশে আছি। যতটুকু পারি সাহায্য আমরা করবো। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং তাঁর কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেছেন বলেও জানান তিনি।ওআইসি ভ’ক্ত দেশের রাষ্ট্রদূত এবং চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে গতকালও বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সকলে এক হয়ে ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের পাশে আছি। এভাবে তাদের ওপর বার বার আঘাত হানা এটা কখনো মেনে নেয়া যায়না, আমরা মানতে পারিনা।যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে সে অর্থ বিশ্বের শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করার আহবান পুণর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং যুদ্ধ বন্ধ করে যে টাকা অস্ত্র বানানোর এবং ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যয় হয় তা যদি বিশ্বের শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য ব্যয় করা হয় তাহলে সব শিশুই উন্নত জীবন পেতে পারে, সেটাই আমাদের দাবি, আমি সবসময় একথা বলে আসছি।
আজকে দেড়শ’ সেতু এবং এরআগে গত বছরের ৭ নভেম্বর ও ২১ ডিসেম্বর সারাদেশে ১শ’ সেতু ও ১শ’ সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে অনেক সেতু ও সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ করেছি। সেগুলো মানুষের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে সুবিধা দেবে।তিনি সড়ক ভবন চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি সুদৃশ্য ম্যুরাল ‘তৃতীয় নেত্র’ উদ্বোধন করেন।তিনি একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিএ’র স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষা কেন্দ্র এবং বিআরটিসির বাস ডিপো ।
সূত্রঃ বাসস
আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীনতার মহান স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে দিবসটি পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-সূর্য উদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল এবং টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, ঘাতকরা একে একে প্রাণ নিয়েছে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। সেই সময় বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
মূলত, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেকেই বাংলাদেশে এক বিপরীত ধারার যাত্রা শুরু হয়। বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক শাসনের অনাচারি ইতিহাস রচিত হতে থাকে। সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনীদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে মানবজাতির কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, আজ আপনাদের সকলের কাছে, বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন,করোনা মহামারি ও জলবায়ু সঙ্কটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।তিনি বলেন, বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জোরদারকরণ, জাতিসংঘের উপর অর্পিত দায়িত্বসমূহ পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য, এবং বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সমর্থন জানায়।প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ অধিবেশনে প্রদত্ত তাঁর ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গেল বারের মত এবারসহ মোট ১৯তম বারের মতো শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।এ বছরের ইউএনজিএ’র মূল প্রতিপাদ্য হলো : ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ত্বরান্বিতকরণ পদক্ষেপ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে বলেন, “আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা, আমার তিন ছোট ভাই, দুই ভ্রাতৃবধূ, চাচাসহ পরিবারের মোট আঠার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।তিনি ও তাঁর ছোট বোন বিদেশে থাকায় সেই বর্বরতা থেকে বেঁচে যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরআগে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ দেশবাসীকে হত্যা এবং দুই লাখ নারীকে নির্মম নির্যাতনের কথাও তিনি ভাষণে উল্লেখ করেন।আসুন আমরা রোহিঙ্গাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেননা ইতোমধ্যেই তাদের বাস্তুচ্যুতির ছয় বছর পেরিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু, পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে।এই অবস্থা চলমান থাকলে এটি আমাদের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলেও আশংকা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ০.৪৭% এরও কম অবদান রাখলেও বাংলাদেশ জলবায়ুজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মারাত্মক হুমকি। এর সমাধানের লক্ষে জরুরি, সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।তিনি বলেন,“আমরা প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলিকে উচ্চাভিলাষী এনডিসি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের উন্নয়ন চাহিদার কথা বিবেচনা করতে হবে। আমরা ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তহবিলের জরুরি বাস্তবায়ন চাই।সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা, লবণাক্ততা, নদী ক্ষয়, বন্যা ও খরা-জনিত কারণে জলবায়ু-অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বানও জানান তিনি।বাংলাদেশ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং জলবায়ু-সহনশীল টেকসই উন্নয়নের পথ অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ সবুজ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বল্প-কার্বন নির্গমন কৌশল প্রণয়ন করছে। তাঁর সরকারের ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে এই তহবিলে এ পর্যন্ত ৪৮০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছি। জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমনের লক্ষে সমুদ্র উপকূলে বাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার, গ্রিন বেল্ট এবং বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে।বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূত মানুষের জন্য বিশ্বের সবচেয় বড় আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে ৪ হাজার ৪০৯টি উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার পরিবারের ৫০ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, তাঁর সরকার ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়ন করছে। যার লক্ষ্য সমন্বিত ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি নিরাপদ, জলবায়ু সহনশীল এবং সমৃদ্ধ ডেল্টা অর্জন।প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে একটি জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জলবায়ু সহনশীল দেশে পরিণত হতে কাজ করছি। বাংলাদেশের ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করছে। আমরা আরও টেকসই শক্তির মিশ্রণের জন্য কাজ করছি। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের শক্তির ৪০% পুনঃনবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়া যাবে।আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক স্থাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ অকার্যকর হয় পড়েছে এবং এ ব্যবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও, আমাদের মত দেশগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া, উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের লক্ষ্যে হিমাগার নির্মাণের জন্য আমাদের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমি জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক ‘খাদ্য ব্যাংক’ চালু করার প্রস্তাব করছি। আমাদের অবশ্যই জলবায়ু-সহনশীল ফসলের গবেষণায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।বিগত কয়েক বছরের আন্তঃসংযুক্ত সঙ্কটগুলি বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি এবং পণ্য মূল্য বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি বিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমরা প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করেছি। আমরা নি¤œ আয়ের ১ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে চাল ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছি।মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং দেশের সকল অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবানের উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২২ সালে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ গঠন এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য, শক্তি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে বিভিন্নমুখী সমাধান প্রদানের জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।খাদ্যপণ্য রপ্তানি এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সমস্যাসমূহের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করার জন্য এই গ্রুপের অন্যতম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তিনি সব সময় জোর দিয়েছেন বলেও জানান।চলবে…. (সূত্র বাসস)
ঢাকা বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। নগরীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য এবং জনগণের সেবা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র।আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে জনগণ সুবিধা পায় এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, এটা প্রমাণিত সত্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই, আজ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে।বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে না দেয়া হবে না বলে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আমি জানি অনেক চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও শফিউল আলম নাদেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেগম আক্তার জাহান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, ঢাকা উত্তর মহানগর সভাপতি বজলুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
১৯৪৯ সালের এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে পরিবর্তন কখনোই আসত না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি গৃহহীন ব্যক্তিকে একটি বাড়ি দেওয়ার লক্ষ্যে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশে কেউ ভূমিহীন থাকবে না, কেউ গৃহহীন থাকবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দিচ্ছে। এমনকি বিনামূল্যে ইনসুলিনও দেওয়া শুরু হয়েছে। “তার মানে, আমরা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং শিক্ষার মতো মানুষের প্রতিটি মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি।উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়াস অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “সাক্ষরতার হার বৃদ্ধির ধারাবাহিকতার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।কোভিড-১৯, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, “(দেশের মানুষ) একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমি এটা জানি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।শেখ হাসিনা দেশের ধনী ব্যক্তিদের আশেপাশে বসবাসতারী যারা একটু দরিদ্র তাদের প্রতি খেয়াল রাখার আহ্বান জানান।তিনি বলেন, “কেউ যেন অস্বাস্থ্যকরভাবে জীবনযাপন না করে। আমরা প্রত্যেককে একটি সুন্দর বাড়ি এবং একটি সুন্দর জীবন দেব।” এটি হবে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার। একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন,জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি এবং আমরা এটি বাস্তবায়ন করব। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছি আজকের বাংলাদেশে মানুষ নুন ভাতের বদলে ভাত মাংস খেতে চায়। অন্তত, আমরা এই উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন ঘটাতে শুরু করে। তিনি দেশের বিভিন্ন খাতে ও সামাজিক সূচকে তার সরকারের অর্জন এবং বিএনপি শাসনামল ও আওয়ামী লীগের বর্তমান শাসনামলের মধ্যে তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটের আকার ২০০৬ সালের মাত্র ৬১,০০০ কোটি টাকা থেকে ৭৬১,৭৮৫ কোটি টাকা, জিডিপির আকার মাত্র ৪.১৫ লাখ কোটি টাকা থেকে এখন ৫০.৩১ লাখ কোটি টাকা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ২০০৬ সালের ৫.৪০ শতাংশ থেকে ৭.২৫ শতাংশে (গড় ৬%) এডিপির আকার ২১,৫০০ কোটি টাকা থেকে ২৭৪,৬৭৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ছিল মাত্র ৫৪৩ মার্কিন ডলার তা থেকে ২,৮২৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যদিও এখন তা ২,৭৬৫ মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাড়িয়েছিল যা বিএনপি শাসনামলে ছিল মাত্র ০.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখনও ৩০.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে। তিনি বলেন, রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ২০০৬ সালের ১০.০৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫২.৯৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বার্ষিক রেমিট্যান্স প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ২৪.০৩ বিলিয়ন ডলার যা বিএনপির আমলে ছিল ৪.৮ বিলিয়ন ডলার। রাজস্ব সংগ্রহ ৩৭,৮৭০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫০০,০০০ কোটি টাকার উপরে দাঁড়িয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের হার বিএনপি শাসনামলে ছিল ৪১.৫১ শতাংশ থেকে থেকে কমে এখন ১৮.৭ শতাংশে, চরম দারিদ্র্যের হার ২৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার ৪৯ শতাংশ থেকে ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।তিনি বলেন, গড় আয়ু ৫৯ বছর থেকে ৭৩ বছর, বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩,০৭৮ মেগাওয়াট থেকে ২৫,২২৭ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে এবং ২০০৬ সালে মাত্র ২৮ শতাংশ থেকে জনসংখ্যার ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ কভারেজের সুবিধাভোগী, স্যানিটারি ল্যাট্রিন কভারেজ ৯৭.৩২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।তিনি আরো বলেন, ৪৩.২৮ শতাংশ থেকে পানীয় জলের সুবিধাভোগী ৫৫ শতাংশ থেকে ৯৮.৮ শতাংশে, সামাজিক নিরাপদ কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ ২,১০৫ কোটি (৪ শতাংশ) থেকে ১২৬,২৭২ কোটি টাকা (বাজেটের ১৬.৫৮ শতাংশ) এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা বিএনপি শাসনামলের ২১,৪৯,৩৫৭ থেকে ১,৮,১২৩,৫৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫,৬৭২ থেকে ১১৮,৮৯১টি, খাদ্য উৎপাদন ২.৬১ কোটি মেট্রিক টন থেকে ৯.৮০ কোটি মেট্রিক টন, খাদ্যশস্য উৎপাদন ১.৮০ কোটি মেট্রিক টন থেকে ৪.৯২ কোটি মেট্রিক টনেদাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ০.২৩ শতাংশ থেকে ৭৩.৫ শতাংশ, মোবাইল সিম সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা ১৯ মিলিয়ন থেকে ১৮৩ মিলিয়নে, ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ২০০ থেকে ৬৭০,০০০ জন, ডিজিটাল পরিষেবার সংখ্যা মুষ্টিমেয় কয়েকজন থেকে ২,১৮০ জনে উন্নীত হয়েছে। সরকারি ওয়েবসাইটের সংখ্যা মাত্র ৯৮টি থেকে ৫১,৬৭৮টি হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আমলে গ্রামীণ সড়ক ৩ হাজার ১৩৩ কিলোমিটার থেকে ৮৯ হাজার ৮৭৪ কিলোমিটার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এর মানে আমরা বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।এবার অংশ্রগ্রহণকারী ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪০৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৬ জন।এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। এর মধ্যে ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৯৮ হাজার ৬১৪ জন। আজ সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ২০২৩ সালের এসএসসির ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।পরে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমারাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মোট ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ২২০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭০ হাজার ৯৭৫ জন এবং ছাত্রী ৮৮ হাজার ২৪৫ জন। মোট পাস করেছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ জন। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭১জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৬ হাজার ৩৭৫ জন।এদিকে,মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট অংশগ্রহণকারী ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ১২ হাজার ৯৬৪ জন। ছাত্র ১ লাখ ৯৫০ জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ১২ হাজার ১৪ জন। পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ১৮৮ জন এবং ছাত্রী ৩ হাজার ২৫ জন।অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৪৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৯ হাজার ৩৮৩ জন এবং ছাত্রী ২৬ হাজার ৩৪৭ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৪৫ জন। ছাত্র ১০ হাজার ৮০১ জন এবং ছাত্রী ৭ হাজার ৩৪৪ জন।এবছর সকল শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৪৮ হাজার ৩৩২ জন ছাত্রী বেশী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৩ হাজার ৬৫০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৯ টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৯০ হাজার ৩০৪ জন বেশী ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৭ হাজার ২৭০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। বিদেশী অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৭৫ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৩২০ জন, পাসের হার শতকরা ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৫ জন।ছাড়া মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৭৫ টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২১ টি।অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিগত বছরগুলোর মতো এবারো সম্পূর্ণ পেপারলেস ফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সরাসরি মোবাইল ফোনে ফল প্রাপ্তীর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়,বোর্ডসমূহ,জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্রমশ উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী,কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: কামাল হোসেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানসহ সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল তিনভাবে জানতে পারবেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট থেকে তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সহজেই ফলাফল জানতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট educationboardresults.gov.bd এ সহযোগিতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে রেজাল্ট শিট (ফুল মার্কসশিট) ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমেও ফলাফল জানতে পারবে।
আবার, মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে ইংরেজিতে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর দিতে হবে। এরপর আবারও স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হয়। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী। এ বছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি। এরমধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে কেন্দ্র ২ হাজার ২৪৪ টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ হাজার ৭৮৬টি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৭১৬টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৮৫টি। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে মোট কেন্দ্র ৮৫০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৯২৭টি। এবার মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবছর পূর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পূর্ণ । সূত্র বাসস
নিজস্ব প্রতিবেদক
দাম নিয়ন্ত্রণে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। আপাতত ৪ প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাসসকে জানান, যে চারটি কোম্পানিকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলো মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি করে মোট ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছেবাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ঠিক কবে ডিম আমদানি হবে তা চার প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে তাদেরকে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ডিম আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু ঋণপত্র খুলে আমদানি করতে হবে, সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।তিনি জানান, কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে, সেটিও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। আমদানিকারক ঠিক করবেন কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করবেন। তবে আমদানি করা ডিমের দাম কী হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে যেহেতু ডিমের খুচরা মূল্য ১২ টাকা করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমদানি করা ডিমও প্রতিটি ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর প্রথমটি হলো, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।এছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে। এমন দুটো শর্তের কথাও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছেপ্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, দেশে প্রতি দিন চার কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। ডিমের চাহিদার বিবেচনায় এক দিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য শুরুতে সেই সংখ্যক ডিম আমদানি করা হবে। বাণিজ্য সচিব আরো বলেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। (সূত্র বাসস)