সচেতনতার বার্তা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন পালন করেছে বিশ্ব হার্ট দিবস

Adithay Kamal ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 September 2023, 544 Views,

নিজস্ব প্রতিবেদক


আজ ২৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার)বিশ্ব হার্ট দিবস’। এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো ‘ইউজ হার্ট, নো হার্ট’। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল দিবসটি পালন করেছে।এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।এতে উপস্থিত ছিলেন, ডাঃ মো. রাজু আহমেদ এমবিবিএস, ডি-কার্ড (বি.এস.এম.এম ইউ)। এইচ এম জাকারিয়া জাকির, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হার্ট ফাউন্ডেশন। প্রাউড অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র কার্ণধার কোহিনূর আক্তার প্রিয়া, জেলা নাগরিক ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন শিপন, আমরাই আগামীর চোখ সংগঠনের প্রতিষ্টাতা সভাপতি নাসির উদ্দিন সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেদুয়ান, জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ।উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রতি রবিবার বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও অসহায় হতদরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা সহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা হয়।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে মিলে বিশ্ব হার্ট ফেডারেশন ১৯৯৯ সালে প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব হার্ট দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়। সে ধারাবাহিকতায় হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০০ সাল থেকে দিনটি পালিত হচ্ছে।চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় হৃদরোগকে বলা হয় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন। হৃদরোগের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলে থাকেন সচল থাকতে পুরো শরীরের মতো হৃদযন্ত্রেরও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আর করোনারি ধমনী হৃদযন্ত্রে ওই অক্সিজেন সরবরাহ করে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপনে করোনারি ধমনীর ভেতরের দেয়ালে ফ্যাট জমে যায়। এর ফলে সময়ের সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফুসফুসে রক্তের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। কার্ডিয়াক ইস্কেমিয়ার পরিস্থতি তৈরি হয়, যাতে হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। বেশ কিছু সময় পর্যন্ত বুঝতে না পারলে বা চিকিৎসায় দেরি হলে হৃদযন্ত্রের কোষগুলোর একে একে মৃত্যু ঘটে। তাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন মানুষ।আজকাল মানুষ অল্প বয়সেই নানা ধরনের রোগ ও সমস্যার শিকার হচ্ছে। হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা আজকাল খুব সাধারণ হয়ে উঠেছে। আজকাল তরুণরাও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছেন।বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১৭ শতাংশই হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। সারা বিশ্বে হৃদরোগে মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার প্রতি বছর বেড়ে চলেছে।মূলত বয়স, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টোরলের মাত্রা, অতিরিক্ত মেদ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী।বাংলাদেশে প্রতিবছর দুই লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার ২৪ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক। গ্লোবাল বারডেন অফ ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করছে যা হৃদরোগ পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলছে।এ পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খসড়া সংশোধনীতে সব জমায়েতের স্থান ও গণপরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করাসহ সব ধরনের খুচরো বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।