স্বত্ব © 2024 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
মুখলেছুর রহমান অভি সৌদি আরব প্রতিনিধি: সৌদি আরবের দাম্মামে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রঃ) ঈসালে সাওয়াব মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে।
৩ ফেব্রুয়ারী দাম্মাম শহরে বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ দাম্মাম প্রাদেশিক শাখার আয়োজনে রঈসুল কুররা ওয়াল মুফাসসিরীন, উস্তাযুল মুহাদ্দিসীন, সুলতানুল আরিফীন হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (রঃ) এর ঈসালে সাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় আরজানি ভিলায় বাদ জুমআ দাম্মাম প্রাদেশিক শাখার সভাপতি সলিম আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আবু বকর নুমান এর পরিচালনায় পবিত্র কালামে পাক থেকে তিলাওয়াত করেন মঈন উদ্দিন, নাতে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবেশন করেন হাফিজ আবু বকর নুমান, শানে ফুলতলী পরিবেশন করেন হাফিজ সালেহ আহমদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ দাম্মাম প্রাদেশিক শাখার প্রধান উপদেষ্টা এম এ লতিফ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শাখার উপদেষ্টা শিবলু বখশ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আলিম উদ্দিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক সাদেক আহমেদ, সহ প্রচার সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক সাহাদত হুসাইন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আলী আমজদ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশিকুল ইসলাম রায়হান। শমসুল ইসলাম, তুফায়েল আহমেদ টিপু, নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ মিজান, বাশির আহমেদ, সাব্বির আহমেদ, রাজিব আহমেদ, ইসমাইল হুসাইন, মোহাম্মদ তায়িফ,মুখতার আলী, মেহেদি হাসান, আলমগীর হুসাইন, আলাউদ্দিন সহ আরো অনেকে। সভাপতির সমাপনী বক্তব্য এবং মিলাদ কিয়াম, দোয়ার মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব মাহফিল সমপন্ন হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সময় টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক মোস্তফা দানীশ ও রংপুর ব্যুরো প্রধান রতন সরকারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সর্বস্তরের সাংবাদিক ও সুধীজনদের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। এতে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সিনিয়র সহসভাপতি মো. জসীম উদ্দিন, সহসভাপতি নিয়াজ মুহাম্মদ খান বিটু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আইসিটি সম্পাদক জালাল উদ্দিন রুমি প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সময় টেলিভিশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো চিফ উজ্জল চক্রবর্তী। এ সময় বক্তারা বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বস্থ করা হয়েছিল এই আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না। তবে সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে একটি চক্র সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য এই আইনের অপপ্রয়োগ করে চলছে। তারা দ্রুত সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
গেলো বছর (২০২৩) কিশোর অপরাধীদের হাতে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত বছরের ৯ জানুয়ারি জেলা শহরে ইজিবাইকের গতিরোধ করে আশিক নামের এক সাংবাদিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ৯ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যার দিকে শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং এর সক্রিয় সদস্য ঘাতক রায়হান আহমেদ সোহানকে জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
নিহত আশিকুর রহমান আশিক ‘দৈনিক পর্যবেক্ষণ’ পত্রিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। আশিক জেলা শহরের মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী আশরাফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় বাতিঘর নামের একটি মানবসেবামূলক সামাজিক সংগঠনের কর্মী ও ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদক বিরোধী আন্দোলন’ এর সভাপতি ছিলেন। এবং জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সিফাত, সৌরভ, তৈয়ব, সাঈফ, রিজু’সহ মাদক বিরোধী প্রচার প্রচারণা চালাতেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম জানান, ‘বেওয়ারিশ লাশ স্বেচ্ছায় দাফন কাজের সঙ্গে জড়িত বাতিঘর নামক সংগঠনের মাসিক সভা ছিল শহরের ফারুকী পার্কে। সেখান থেকে সভা শেষ করে শহরে ফেরার পথে মাদকাসক্ত রায়হান’সহ আরও ৪-৫ জন আশিককে বহনকারী ইজিবাইকের গতিরোধ করে বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গেলো বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে আরাফাত হোসেন (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আরাফাতের পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে আরাফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে জেলা শহরের ট্যাঙ্কের পাড় এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আশুগঞ্জের লালপুর এলাকার সৌদি প্রবাসী নোমানের পরামর্শে ইয়াছিন ও হযরত নামের দুই কিশোর পরিকল্পিতভাবে আরাফাতকে হত্যা করেছে। ঘটনার আগের দিন সকালে আরাফাত জন্মনিবন্ধনের কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন বৃহস্পতিবার রাতে আশুগঞ্জ থানা থেকে আরাফাতের মৃত্যুর বিষয়টি তাদের জানানো হয়।
পরিবারটির দাবি, সৌদি প্রবাসী নোমানের পরামর্শে শরীফপুর এলাকার ইয়াছিন এক তরুণী ও আরফাতকে সঙ্গে নিয়ে আশুগঞ্জে হযরতের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। সেখানে আরাফাতকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়িতে অবস্থানকারী এক তরুণীকে আটক করা হয়।
গেলো বছরের ২৪ মে ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা ইকরাম আহমেদ খুন হয়েছেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় আরেক ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে রায়হান নামের এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। নিহত ইকরাম সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের মাছুদ আহমেদের ছেলে। তবে ইকরাম পরিবারের সঙ্গে জেলা শহরের কালাইশ্রীপাড়া ডা. ফরিদুল হুদা সড়কের একটি বাড়িতে থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় ইকরাম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রিদওয়ান আনসারির বাসায় ছিলেন। আটক রায়হান ঢাকার মগবাজার এলাকার জিয়াউল হকের ছেলে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দাবি, রায়হান মাদকাসক্ত।
নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মদদ দিচ্ছে। ‘হিরোইজম’ প্রকাশ করতেও পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে। আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, প্রেমের বিরোধ, মাদকসহ নানা অপরাধে কিশোররা খুনাখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় ‘বড় ভাই’রা।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহরে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুনাখুনি, মাদক, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুন, ছিনতাই-চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিং এবং মাদক ব্যবসার মতো অপরাধে বেশি জড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের নিয়ন্ত্রক বা পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় সমাজের কিছু ‘বড় ভাই’ রয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেফতার কিশোরদের দেশের তিনটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবি অপ্রতুল। অধিকাংশ কিশোরই হত্যা, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক, নারী ও শিশু নির্যাতন, পর্নোগ্রাফি, তথ্যপ্রযুক্তি মামলার আসামি।
বর্তমানে কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিদিনই ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ এবং খুন-খারাবি ইত্যাদি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এদের অত্যাচার নির্যাতনে সমাজ বিষিয়ে উঠেছে। মানুষ অস্বস্তিকর অশান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সমাজের নিরীহ অংশ বিশেষ করে যাদের কোনো প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বা প্রভাবশালী মহলের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক ও যোগাযোগ নেই তাদের আতঙ্কই বেশি। তারা তাদের সহায়-সম্পদ ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটায়; কখন কারা জায়গা-জমি দখল করতে আসে বা চাঁদা দাবি করে অথবা স্কুল-কলেজে পড়ুয়া মেয়েটিকে কখন কোন বখাটে বিরক্ত করে বা স্কুলে যাওয়া ছেলেটিকে তাদের গ্যাংয়ের দলে ভিড়িয়ে ফেলে। এ ছাড়া এসব গ্যাংয়ের উৎপাতে পাড়ায় পাড়ায় মারামারি কাটাকাটি তো লেগেই আছে। এই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে তরুণদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা-পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে সস্তা ছেলে-মেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এ সমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্যসংখ্যা বাড়ছে।
ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মতো খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা। উঠতি বয়সের, স্কুল-কলেজগামী কিশোরদের একটি অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ওই দিকেই ঝুঁকছে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুড়ঙ্গের অপরপ্রান্তে জমা হচ্ছে নিকষকালো অন্ধকার। যারা এই জাতিকে আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে তারা যদি এই আগ্রাসী কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির চর্চা করে বেড়ে ওঠে তবে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। সুতরাং আজকের কিশোর গ্যাং কালচার দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শহুরে জীবনের পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-তরুণরা প্রথমে ছোট ছোট গ্রুপ করে ‘স্টার বন্ড’, ‘সাইজ কইরা দে’, ‘আমিই বস’ ইত্যাদি উদ্ভট অথচ রোমাঞ্চকর গ্রুপের নামে আড্ডারাজি শুরু করে। ধীরে ধীরে শুরু হয় ছোট ছোট দলগত অপরাধকর্ম ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার বা দলগত সেরা হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া। অন্য দল বা অন্য এলাকার কিশোরদের ওপর প্রভাবশালী হয়ে উঠার এক রোমাঞ্চকর স্বাদ তারা পেয়ে যায় কাউকে মারধর করে বা অপমান করে।
ভিকটিমরাও তখন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে ঘটে যায় খুনের ঘটনা। জড়িত হয়ে পড়ে স্থানীয় নেতারাও। তারা ‘বড় ভাই’ হিসেবে আগলে রাখেন গ্যাংগুলোকে। বিনিময়ে নিজেদের আর্থরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে থাকেন এসব গ্যাংকে। গ্যাংয়ের সদস্যরাও ‘বড় ভাই’দের শেল্টারে থেকে নির্বিঘ্নে করে যায় নানা অপরাধ। ‘বড় ভাই’য়েরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্পর্শ থেকে আগলে রাখে গ্যাংয়ের সদস্যদের। এভাবে একটি কিশোর গ্যাং জন্ম নিয়ে দাপটের সাথে এলাকায় বিস্তার করে ‘অপরাধ সাম্রাজ্য’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, কিশোর গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িতরা পর্যায়ক্রমে আলাদা আলাদা গ্রুপ তৈরি করে। তাদের ড্রেস কোড থাকে, আলাদা হেয়ার স্টাইল থাকে, তাদের চালচলনও ভিন্ন। তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। নানাভাবে তারা অর্থ সংস্থানের চেষ্টা করে। এলাকার কোনো ‘বড় ভাই’র সহযোগী শক্তি হিসেবেও তারা কাজ করে।
সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, কিশোরদের একত্রিত করে কতিপয় ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত করছেন। তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। সহজ ও অল্প খরচে কিশোরদের দিয়ে তারা অপরাধ করানোর সুযোগ নিচ্ছে। অস্ত্রবাজি, মাদক ও হত্যাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা কিশোরদের ব্যবহার করে। এছাড়া কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কিশোর গ্যাং তৈরি করছে। এটি হল কিশোর গ্যাং তৈরির একটি দিক। অন্য আরেকটি দিক হল- আমাদের দেশে শিশুদের লালনপালন করার ক্ষেত্রে পরিবারগুলো শিক্ষা, চিকিৎসা এবং অন্যান্য বিষয়ে যথাযথভাবে দায়িত্বপালন করছে না। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরা অপরাধে জড়ায় এমন একটি কথা সমাজে প্রচলিত আছে। এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এখন উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও অপরাধে জড়াচ্ছে। সঠিক ও সুষ্ঠু সামাজিকীকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে কিশোরদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হচ্ছে। এগুলো প্রশমিত না হওয়ায় তারা নানা ধরনের অপরাধে জড়াচ্ছে। এসব কারণ বিশ্লেষণ করে সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কিশোর অপরাধ কমানো সম্ভব নয়।
আরেকটি বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে, তা হচ্ছে কিশোর সংশোধন কেন্দ্র। প্রচলিত আইনে ১৮ বছরের নিচে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদের বড় কোনো শাস্তির পরিবর্তে পাঠানো হচ্ছে গাজীপুরে অবস্থিত কিশোর সংশোধনাগারে। যেসব কিশোরের সংশোধনাগারে নেওয়া হচ্ছে, তাদের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা আছে কি? একজন কিশোর সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে এসে যদি আবার খারাপ অপরাধে জড়িয়েই পড়ে তবে তা আমাদের জন্য চরম ব্যর্থতা। প্রয়োজনে আইন সংস্কার এবং কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা এ দুই বিষয় নিয়েও আমাদের ভাবার অবকাশ থেকে যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উদাসিতা ও রাজনৈতিক বড়ভাইদের তদবির অনেকটা দায়ী বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।
জুয়েল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও ভৈরবে পৃথক পৃথক অভিযানে ৪৮ কেজি গাঁজাসহ ০২ জন মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, ভৈরব ক্যাম্প। এসময় ০১ টি মাইক্রোবাস ও ০১টি পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। রবিবার (০৯ এপ্রিল) সকাল ০৬.২০ ঘটিকায় কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানাধীন দুর্জয় মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আখাউড়া পৌরসভার দেবগ্রামের সামসুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মাদক কারবারি মনির হোসেন ভূঁইয়া(৪৮) কে আটক করা হয়। এসময় ০১ টি মাইক্রোবাস তল্লাশী করে ৩৬ কেজি গাঁজা এবং নগদ ৪হাজার ৫শত টাকা উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। একই দিন সকাল ০৮.৩০ ঘটিকায় অপর অভিযানে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন উজানভাটি হোটেলের সামনে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেন থেকে মাদক কারবারি মামুন হোসেন (৩৫)কে আটক করেন। তিনি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার সাইনাল গ্রামের মোঃ হোসেন এর ছেলে। এসময় ১টি পিকআপ তল্লাশী করে ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। জানা যায়, র্যাব-১৪ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন ও দিক নির্দেশনায় এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, ভৈরব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই অভিযানদ্বয় পরিচালনা করেন। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জুয়েল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
একটি গণতান্ত্রিক দেশে যে কোন রাজনৈতিক দল তার রাজতৈনিক কর্মকান্ড করতে পারে। তাতে আওয়ামীলীগ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কোন আপত্তি নাই। কারণ আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আওয়ামীলীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র স্থাপন করেছে।’ শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি’র পদযাত্রা কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি সংবিধান আছে। বাংলাদেশের সংবিধানে জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে তা সম্পূর্ণ ভাবে লিখা আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে।এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, আখাউড়া-কসবা সার্কেল (অতিরিক্ত) নবীনগর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আব্দুল্লাহ ভূইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
ভোলা,হাসান লিটন
চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচায় কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ অক্টোবর) বেলা ১২টায় চরআইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হল রুমে কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চরআইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.শহিদউল্ল্যাহ’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাঈদ আহমেদ( পিপিএম) ও দক্ষিণ আইচা থানার এস আই নেছার উদ্দিন, এস আই সবুজ কর, এস আই শহিদুল্লাহ সহ উপস্থিত ছিলেন উক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ। কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রায় ২শ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এরমধ্যে ১৫ জন শিক্ষার্থী বিজয় হন। বিজয়ী শিক্ষার্থীদেরকে পুরস্কার বিতরণের শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থীদেরকে মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, যৌতুক সহ সচেতনতামূলক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আইনি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন বক্তারা।