স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মতিঝিলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মচারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, গৌতম ভট্টাচার্য, হাবিবুর রহমান, পরিতোষ মন্ডল ও মো. এসকেন আলী খান। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, ৪টি মোবাইল, দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের ১টি খাম ও দুদকের একটি নোটিশ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গৌতম ভট্টাচার্য দুদকের ডিজি মানি লন্ডারিং-এর পিএ হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। গ্রেফতার এসকেন আলী খান চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য, তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। অপর দু’জন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। তারা বিভিন্ন প্রতারণার সাথে জড়িত বলে জানা যায়।শুক্রবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের স্পেশাল অপারেশন টিম তাদের গ্রেফতার করে।শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।তিনি বলেন, গত ২০ জুন সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকার ব্যবসায়ি আশিকুজ্জামানের উত্তরার বাসায় দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের খামে ১টি নোটিশ নিয়ে একজন অফিসার হাজির হয়। কার্পেটের ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের চোরাচালান এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ শুনে ভয় পেয়ে যান আশিকুজ্জামান। তখন দুদকের সে অফিসার আশিকুজ্জামানকে একটু সহানুভূতি দেখানোর ভান করে তাকে মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ডিবি, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক এবং এনএসআই দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে খুঁজছে বলেও ভয় দেখানো হয়। দুদকেও তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, এরপর চক্রটি ভুক্তভোগীকে মিষ্টির প্যাকেটে টাকা নিয়ে মতিঝিলের একটি হোটেলে আসতে বলে। এ বিষয়ে আগে থেকে গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছিল গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। পরে দাবি করা টাকা নিতে হোটেলে আসলে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি স্পেশাল অপারেশন টিম।
তিনি বলেন, মূলহোতা গৌতম ভট্টাচার্য কর্ম সূত্রেই জানে কিভাবে মানুষকে দুর্নীতি সংক্রান্ত নোটিশ পাঠাতে হয়। কিভাবে তাদের কাছ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক ব্যাখ্যা নেয়া হয় এবং কিভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সে তার দুষ্কর্মের সহযোগীদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও চাকুরীজীবীকে টার্গেট করতো। তাদের ব্যক্তিগত নানা তথ্য সংগ্রহ করে দুদকের চিঠির খামে, প্যাড ও ফরমেট ব্যবহার করে অভিযোগের নোটিশ পাঠাতো। পরবর্তীতে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দান ও সমঝোতার নামে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিত চক্রটি।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্রঃ ঢাকা, বাসস
সালমান হোসাইন
জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে শুরু হলো বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী ও উপন্যাসিক, “তিতাস একটি নদীর নাম” নামক উপন্যাসের রচয়িতা অদ্বৈত মল্লবর্মণের স্মরণে ৩ দিনব্যাপী “ ২য় অদ্বৈত গ্রন্থমেলা-২০২৪। অদ্বৈত মল্লবর্মণের জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার গোকর্ণঘাটে অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ” ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রি. মঙ্গলবার, বিকাল ৪টায় মেলা শুরু হয়।মেলার আহবায়ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি ও গীতিকার- মো. আ. কুদদূসের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি – গবেষক ও সংগঠক জয়দুল হোসেন, সভাপতি সাহিত্য একাডেমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। কবি ও প্রাবন্ধিক অশোকানন্দ রায়বর্ধন, ত্রিপুরা ভারত। শিশুসাহিত্যিক বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী, ত্রিপুরা ভারত। কবি ও গবেষক ড. বিপ্লব মণ্ডল, পশ্চিমবঙ্গ ভারত। মানবর্দ্ধন পাল, প্রাবন্ধিক ও গবেষক অতিথি অধ্যাপক ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়। বাহার মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব। মোঃ মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। মোঃ ফারুক আহমেদ, কাউন্সিলর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা। আলহাজ ফেরদৌসুর রহমান,সাবেক কাউন্সিলর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা। পরিমল ভৌমিক, প্রধান শিক্ষক গোকর্ণঘাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রমুখ।কবি হেলার উদ্দিন হৃদয়ের সঞ্চালনায় উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন।বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী অদ্বৈত মল্লবর্মণ ” তিতাস একটি নদীর নাম ” তার অতুলনীয় এক সাহিত্যকর্ম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার গোকর্ণঘাটে নিজ জন্মভিটায় তাঁর স্মৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের আয়োজনে ২০২৩ সালের ২০-২২ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছিল ‘অদ্বৈত গ্রন্থমেলা-২০২৩’। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ দিনব্যাপী ২০, ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ২য় অদ্বৈত গ্রন্থমেলা-২০২৪।এবারের মেলায় বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিথযশা কবি-সাহিত্যিকদের সম্মিলন ঘটেছে। মেলার তিনদিনেই অদ্বৈত মুক্তমঞ্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রায় সকল আবৃত্তি সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আবৃত্তি ও সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন থাকছে। তিনদিনব্যাপী এই মেলায় বইপ্রেমী সকল শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণ ঘটছে।মেলার সমাপনী দিন যথারীতি ঘোষণা করা হবে’ অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে মানবজাতির কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, আজ আপনাদের সকলের কাছে, বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন,করোনা মহামারি ও জলবায়ু সঙ্কটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।তিনি বলেন, বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জোরদারকরণ, জাতিসংঘের উপর অর্পিত দায়িত্বসমূহ পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য, এবং বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সমর্থন জানায়।প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ অধিবেশনে প্রদত্ত তাঁর ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গেল বারের মত এবারসহ মোট ১৯তম বারের মতো শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।এ বছরের ইউএনজিএ’র মূল প্রতিপাদ্য হলো : ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ত্বরান্বিতকরণ পদক্ষেপ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে বলেন, “আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা, আমার তিন ছোট ভাই, দুই ভ্রাতৃবধূ, চাচাসহ পরিবারের মোট আঠার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।তিনি ও তাঁর ছোট বোন বিদেশে থাকায় সেই বর্বরতা থেকে বেঁচে যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরআগে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ দেশবাসীকে হত্যা এবং দুই লাখ নারীকে নির্মম নির্যাতনের কথাও তিনি ভাষণে উল্লেখ করেন।আসুন আমরা রোহিঙ্গাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেননা ইতোমধ্যেই তাদের বাস্তুচ্যুতির ছয় বছর পেরিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু, পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে।এই অবস্থা চলমান থাকলে এটি আমাদের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলেও আশংকা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ০.৪৭% এরও কম অবদান রাখলেও বাংলাদেশ জলবায়ুজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মারাত্মক হুমকি। এর সমাধানের লক্ষে জরুরি, সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।তিনি বলেন,“আমরা প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলিকে উচ্চাভিলাষী এনডিসি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের উন্নয়ন চাহিদার কথা বিবেচনা করতে হবে। আমরা ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তহবিলের জরুরি বাস্তবায়ন চাই।সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা, লবণাক্ততা, নদী ক্ষয়, বন্যা ও খরা-জনিত কারণে জলবায়ু-অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বানও জানান তিনি।বাংলাদেশ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং জলবায়ু-সহনশীল টেকসই উন্নয়নের পথ অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ সবুজ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বল্প-কার্বন নির্গমন কৌশল প্রণয়ন করছে। তাঁর সরকারের ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে এই তহবিলে এ পর্যন্ত ৪৮০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছি। জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমনের লক্ষে সমুদ্র উপকূলে বাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার, গ্রিন বেল্ট এবং বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে।বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূত মানুষের জন্য বিশ্বের সবচেয় বড় আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে ৪ হাজার ৪০৯টি উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার পরিবারের ৫০ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, তাঁর সরকার ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়ন করছে। যার লক্ষ্য সমন্বিত ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি নিরাপদ, জলবায়ু সহনশীল এবং সমৃদ্ধ ডেল্টা অর্জন।প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে একটি জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জলবায়ু সহনশীল দেশে পরিণত হতে কাজ করছি। বাংলাদেশের ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করছে। আমরা আরও টেকসই শক্তির মিশ্রণের জন্য কাজ করছি। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের শক্তির ৪০% পুনঃনবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়া যাবে।আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক স্থাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ অকার্যকর হয় পড়েছে এবং এ ব্যবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও, আমাদের মত দেশগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া, উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের লক্ষ্যে হিমাগার নির্মাণের জন্য আমাদের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমি জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক ‘খাদ্য ব্যাংক’ চালু করার প্রস্তাব করছি। আমাদের অবশ্যই জলবায়ু-সহনশীল ফসলের গবেষণায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।বিগত কয়েক বছরের আন্তঃসংযুক্ত সঙ্কটগুলি বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি এবং পণ্য মূল্য বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি বিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমরা প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করেছি। আমরা নি¤œ আয়ের ১ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে চাল ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছি।মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং দেশের সকল অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবানের উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২২ সালে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ গঠন এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য, শক্তি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে বিভিন্নমুখী সমাধান প্রদানের জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।খাদ্যপণ্য রপ্তানি এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সমস্যাসমূহের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করার জন্য এই গ্রুপের অন্যতম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তিনি সব সময় জোর দিয়েছেন বলেও জানান।চলবে…. (সূত্র বাসস)
প্রধানমন্ত্রী শেখ আজ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনের সময় তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে (বিজেডব্লিউটি) আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৩-এ প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘যেহেতু আমি এটি (বিজেডব্লিউটি) প্রতিষ্ঠা করেছি এবং আবার এখানে এসেছি। তাই আমি বিজেডব্লিউটিকে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেব।তিনি বলেন, তিনি দেশের সাংবাদিকদের উন্নয়নের জন্য বিজেডব্লিউটি গঠন করার সময় একটি প্রথমিক তহবিল দিয়েছিলেন।
অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তির বিজেডব্লিউটি-কে অর্থ দেওয়ার কথা থাকলেও খুব কম লোকই তা দিয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি কারা এই অর্থ দিয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে ৫ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল দিয়ে এই ট্রাস্ট ফান্ড চালু করেন। পরে বিভিন্ন সময়ে তিনি এই তহবিলে আরও অনুদান দেন।বিএফইউজে প্রতিনিধি সম্মেলনে তাঁর বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক সহায়তা কর্মসূচিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ‘সাংবাদিক সহায়তা ভাতা ও অনুদান নীতি-২০১২’ এবং ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৪’ প্রণয়ন করেছি।তিনি বলেন, এ আইনে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে।২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে ২০ কোটি টাকা অনুদান দেন।শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৩,৪৩৩ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মাঝে কল্যাণ অনুদান হিসাবে মোট ২৯ কোটি ৮১ লাখ ৫০ হজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এছাড়াও, কোভিড-১৯ এর সময়ের প্রথম পর্যায়ে, বিজেডব্লিউটি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত ৩,৩৫০ জন সাংবাদিকদের মধ্যে ৩.৩৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে সরকার করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের জন্য বিজেডব্লিউটি থেকে আরও ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মোট ৬,৭২৭ জন সাংবাদিককে মোট ৬ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রত্যেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তায় ১০,০০০ টাকা পেয়েছেন। সূত্রঃ বাসস
নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫ জন। আজ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৩৬১ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১ হাজার ১২২ এবং ঢাকা মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ২৩৯ জন ভর্তি হয়েছে।আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৮ হাজার ৪৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৪ হাজার ৮০৯ এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে ভর্তি রয়েছে ৩ হাজার ৬৫৮ জন রোগী।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এ পর্যন্ত ৪২ হাজার ৭০২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৪ হাজার ৭৯৮ এবং ঢাকার বাইরে ১৭ হাজার ৯০৪ জন। এদিকে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এ পর্যন্ত ২২৫ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩৪ হাজার ১০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৯ হাজার ৮১২ এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ১৯৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৬৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫ জন। সূত্র বাসস