স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পৌর শহরের পুরাতন বাজারে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবরে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে পৌর শহরের পুরাতন বাজারে এ অভিযান চালানো হয়।ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার। অভিযানে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও বাজার কমিটির দফতর সম্পাদক মো. দুলু মিয়াসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় একজন পাইকারি ব্যবসায়ী ও দু’জন খুচরা দোকানিকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক খুচরা বিক্রেতা জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসার খবরে স্থানীয় পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা শনিবার সকাল থেকে ১০০-১১০ টাকার কেজি মূল্যের পেঁয়াজ অতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে বিক্রি শুরু করেন খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট। খুচরা ব্যবসায়ীরা রশিদ চাইলেও দিতে অস্বীকৃতি জানায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা অধিক দামে পাইকারদের কাছ থেকে পেঁয়াজ অধিক দামে এনে ভোক্তাদের নিকট ১৮০/২০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন। যারা আগে কিনে মজুদ রেখেছিলেন তারাও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছিলেন। অভিযোগ পেয়ে অভিযানে নামেন উপজেলা প্রশাসন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, অতিরিক্ত মূল্যে পেয়াজ বিক্রয় ও পণ্য তালিকা সংরক্ষণ আইনে তাদেরকে এ জরিমান করা হয়েছে। সকল ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মূল্য না রাখার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার আখাউড়া চেকপোস্ট সীমান্তের শূন্য রেখায় বিজিবি-বিএসএফ যৌথ রিট্রিট সিরিমনি প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকাল ৫টায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যদের চৌকস দল প্যারেড ও সালাম প্রদান শেষে বিউগলের সুরের সঙ্গে সঙ্গে উভয় দেশের জাতীয় পতাকা নামানো হয়। ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এই সিরিমনি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শরিফুল ইসলাম মেরাজ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এস.এম. শান্তুনু চৌধুরী, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার প্রমুখ। এসময় বিজিবি-বিএসএফ প্যারেড দল মনোমুগ্ধকর এক প্যারেড প্রদর্শন করেন। প্যারেড শেষে বিউগলে চমৎকার এক সুর বেজে ওঠে। এসময় সীমান্তের দুই পাশে শত শত দর্শনার্থী দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্যারেড উপভোগ করেন ও করতালির মাধ্যমে তাদের অভিনন্দন জানান। পরে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএসএফ’র হাতে ফুল, ফল ও মিষ্টি বিনিময় করা হয়। এসময় বিএসএফ ৪২ ব্যাটালিয়নের কমাডেন্টের প্রতিনিধি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন,‘এটা দেখে খুব ভালো লাগছে যে, বাংলাদেশ দিন দিন উন্নতি করছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে।’ বিজিবি কুমিল্লা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শরিফুল ইসলাম মেরাজ বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের জন্য একটি আনন্দের দিন। আজকে আমাদের ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকে আমি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে।’ এই সীমান্তে সীমান্ত হত্যা শূণ্যের কোটায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : সমাজসেবা ও মানবিক কাজে অনবদ্য অবদান রাখায় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা পেলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শামীম হোসেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পী কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে দরিদ্রের শীতবস্ত্র ও শিল্পীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় সুর সম্রাট দি-আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মঞ্চে সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় তাঁকে এ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
মো. শামীম হোসেন সমাজসেবায় স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, সুযোগ পেলেই মানুষের পাশে দাঁড়ান। তিনি ইতিমধ্যে মানবতারসেবক হিসেবে সমাদৃত হয়েছেন। পেশায় তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। ডাকনাম খাজা শামীম শাহ্। জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
তিনি ব্যবসার পাশাপাশি মানবসেবামূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সমাজসেবামূলক অনেক সংগঠনের সাথে তিনি জড়িত। লিয়েন ফাউন্ডেশন (মানবাধিকার ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ) এর চেয়ারম্যান, বসুতি মা ও শিশু হাসপাতাল লিমিটেড এর ভাইস-চেয়ারম্যান, ইউনাইটেড কম্পিউটার্স এর সিইও ও স্বত্বাধিকারী, আজমীর শরীফ এর খলিফা হিসেবে তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সদাহাস্যোজ্জ্বল এ মানুষটি সমাজসেবামূলক কাজের জন্য ইতিমধ্যে সম্মাননা প্রাপ্ত হয়েছেন। মো. শামীম হোসেন ছাত্রজীবন থেকে’ই মানুষের সেবায় বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন। মসজিদ, মাদ্রাসায় দান, অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসা সেবার জন্য অর্থিক সহযোগিতা, মেয়েকে বিবাহ দিতে না পারা অসচ্ছল পরিবারকে সহায়তা প্রদান সহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন বিশিষ্ট এই সমাজ সেবক।
সমাজসেবা মূলক কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ভালোলাগার বিষয়টি হলো মানুষের জন্য কিছু করতে পারা। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানে। আর এই সমাজসেবা মূলক কাজকে আমি অমৃত লালন করতে চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পী কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম তৌছির এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গানের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট কবি আব্দুল মান্নান সরকার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দানবীর মো. শামীম হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া শাহীন, তিতাস বার্তা’র সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল মতিন শানু।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমীর সাবেক পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন, রোকেয়া সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি রোকেয়া রহমান কেয়া, পিস ভিশন বাংলাদেশের সভাপতি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর, বিশিষ্ট নারী সংগঠক কোহিনূর আক্তার প্রিয়া, কবির কলমের সভাপতি তিতাস হুমায়ূন, কবি আজীজা সোপান।
আরো উপস্থিত ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পী কল্যাণ পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি শূফিগুরু শাহাজাদ খান, সহ-সভাপতি শাহাদত হোসেন সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আদিত্ব্য কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান সরকার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কাশ্মীরী খাতুন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিন্নাত নারজিয়া স্নিগ্ধা প্রমুখ।
এতে শতাধিক দরিদ্রদের শীতবস্ত্র ও অর্ধশতাধিক কণ্ঠশিল্পী ও যন্ত্রশিল্পীদের মাঝে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় ‘মো. শামীম হোসেন, ‘মো. আবুল আজাদ’, ‘মো. শফিকুল ইসলাম তৌছির’, ‘শূফিগুরু শাহাজাদ খান’ ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় ‘আদিত্ব্য কামাল’কে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, নান্দনিক উপস্থাপক আবদুল মতিন শিপন, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন, আমানুল্লাহ মুর্তজা।
নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে হত্যা মামলা ও চাঁদাবাজী মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার খাগাতুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পালিয়ে যাওয়ার আসামির নাম হালিম মিয়া (৩০)।তিনি উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের খাগাতুয়া গ্রামের মাসুদ হত্যা মামলা ও চাঁদাবাজী মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।জানা যায়, নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের খাগাতুয়া গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে হালিম মিয়া (৩০) খাগাতুয়া গ্রামের মাসুদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি, হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও একটি চাঁদবাজি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় খাগাতুয়া গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হালিমকে আটক করে তার হাতে হাতকড়া লাগানোর সময় নবীনগর থানার এএসআই আশরাফুল আরিফের হাতে কামড় দিয়ে তিনি পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আসামিকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করায় খাগাতুয়া গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে বিজয় মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা (ভিপি মারুফ) গ্রাম পুলিশের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেফতারের জন্যে অভিযান চলছে।
জুয়েল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন কারাবন্দিরা। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফটকে ও হাজতখানায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ৬৯ জন কারাবন্দিকে নিয়ে একটি প্রিজনভ্যান জেলা কারাগার থেকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ফটকে যায়। কারাবন্দিরা ভ্যান থেকে নামার সময় নানা অশালীন ভাষায় আইনজীবীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এসময় তাদের বেশ উগ্র আচরণ করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হাজতখানায় প্রবেশ করান। হাজতেও তারা স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে বুধবার (৮ফেব্রুয়ারি) জানা যায়, জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এ তিন দিন ধরে বাদী ও বিবাদী নিজেরাই যুক্তি-পাল্টাযুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে শুনানি করছেন। এর ভিত্তিতে আদেশও দিচ্ছেন ওই দুই আদালতের বিচারক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা দাবি পূরণ না হওয়ায়
ফের সব আদালত বর্জন শুরু করেছেন। । আগে থেকেই তাঁরা জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করে আসছিলেন। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এ গত বুধবার ৬৩টি মামলার শুনানি ধার্য ছিল। কোনো আইনজীবী আদালতের এজলাসে উপস্থিত না থাকায় দুটি মামলার বিচারপ্রার্থীরা নিজেরাই শুনানি করেন। দুটি মামলাই উভয় পক্ষের সম্মতিতে সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
একটি হলো বাদী মদিনা বেগম তাঁর প্রতিবেশী খায়ের মিয়ার বিরুদ্ধে হয়রানির যে মামলা করেছিলেন তা উঠিয়ে নেন। অন্যটি ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট সেতু আক্তার নামের এক নারী তাঁর স্বামী তারেকের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা উঠিয়ে নেন।
এর আগের দিন মঙ্গলবারও এ রকম কিছু মামলার শুনানি হয়েছে। সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়ার এনায়েত নারী নির্যাতন মামলার আসামি। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এ ওই দিন তাঁর মামলার শুনানি হয়। এনায়েতের দুলাভাই হাবিবুর রহমান আদালতে শ্যালকের হয়ে শুনানি করেন। যুক্তি উপস্থাপন শেষে এনায়েতকে জামিন দেন বিচারক
জামিন পেয়ে খুশি এনায়েত বলেন, ‘আগে জানতাম না উকিল (আইনজীবী) ছাড়া বিচারকের সঙ্গে কথা বলা যায়। আমি আর আমার দুলাভাইয়ের কথা শুনে স্যার (বিচারক) জামিন দেওয়ায় খুব খুশি হইছি। আমি ন্যায়বিচার পাইছি। এক টাকাও আলাদা কোনো খরচ লাগেনি।’
মঙ্গলবার ওই আদালতে তিনটি মামলার শুনানি হয়। দুটি মামলায় আসামিপক্ষকে জামিন এবং আরেকটি মামলায় আসামির প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রতিটি মামলায়ই বাদী ও বিবাদী পক্ষ নিজেরাই শুনানি করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার; নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ এবং জেলা জজের নাজির মুমিনুলের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছেন আইনজীবীরা। একই দাবিতে ৫ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে সব আদালত বর্জন করে আসছিলেন জেলা বারের আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালত বর্জন অব্যাহত রেখে বাকি সব আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেন আইনজীবীরা। দাবি আদায় না হওয়ায় গতকাল থেকে আবার সব আদালত বর্জন কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।
জুয়েল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের মাসিক সভা থেকে ৮ সদস্যকে বের করে দিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। ইচ্ছেমতো প্যানেল চেয়ারম্যান বানানো এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রকল্প গ্রহণ ও অর্থ বণ্টনের রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করায় তাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। গতকাল পরিষদের তৃতীয় মাসিক সভায় এ ঘটনা ঘটে। পরিষদের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সভার শুরুতে দ্বিতীয় সভায় স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নেয়া সিদ্ধান্তের রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তাদের বলেন । এতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান তাদের সভা থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় দেড়টায়। এরপর মিনিট ১৫ সভায় অংশগ্রহণ ছিল ৮ সদস্যের। এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে ওই সদস্যদের মন্ত্রণালয়ে করা অভিযোগের নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের কথা বলেন। এ নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে তার তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। এরপরই সদস্যরা সভা ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন। এদিকে সভাকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদে এক ইন্সপেক্টর ও ২ সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে মোট ১৫/২০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ জানান, মিটিংয়ে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান আমাদের বলেন আমরা নাকি উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রদের অপমান করার জন্যে লজ্জাকর ইতিহাস তেরি করেছি।এটি নিন্দনীয় কাজ হয়েছে বলে তিনি আমাদেরকে এ ব্যাপারে নিন্দা জানাতে বলেন। এ সময় আমরা নিন্দার বিষয়টি বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানকে আমাদের কথা শুনতে বলি। তখন চেয়ারম্যান বলেন, কথা বলতে চাইলে আগে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেন, না হলে বেরিয়ে যান। আপনাদের মিটিংয়ে অ্যাটেন্ড করার দরকার নেই। যেহেতু আমাদের কথা বলতে দেবে না, আর ইতিপূর্বে প্যানেল চেয়ারম্যান ও বরাদ্দে বণ্টনের বিষয়ে চেয়ারম্যানের ইচ্ছেমতো নেয়া রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলা হচ্ছে, আমরা সেটি না করে বেরিয়ে আসি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা থেকে নির্বাচিত পরিষদ সদস্য বাবুল মিয়া বলেন, মিটিংয়ে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান বিগত মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমাদের স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমাদের কোনো কথা শুনতে চাইছিলেন না। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের বাকবিতণ্ডা হয়। চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নিন্দা প্রস্তাব দিতে বলেন। আমরা এরও প্রতিবাদ করি। এছাড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তার নিজ ক্ষমতা বলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রদের ৪ লাখ টাকা করে এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ৩ লাখ টাকা করে বরাদ্দ বিভাজন করেন। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উন্নয়ন প্রকল্পের চাহিদা প্রদানের একটি ফরম ছাপিয়ে বণ্টন করেছেন। এ ছাড়া কোনো অনুমোদন ছাড়াই ৮/১০ লাখ টাকায় ৩ হাজার কম্বল ক্রয় করেন। এর আগে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব বরাবর চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন পরিষদের ৮ সদস্য। তারা হচ্ছেন- আখাউড়ার সাইফুল ইসলাম, সরাইলের পায়েল হোসেন মৃধা, নাসিরনগরের সামসুল কিবরিয়া, আশুগঞ্জের বিল্লাল মিয়া, বাঞ্ছারামপুরের আবুল কালাম আজাদ, বিজয়নগরের বাবুল আক্তার, সদর উপজেলার বাবুল মিয়া ও সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ।এতে অভিযোগ করা হয়, গত ১লা জানুয়ারি পরিষদের দ্বিতীয় সভায় বরাদ্দ বিতরণ নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন চেয়ারম্যান। পরিষদের প্রথম সভায় সকল সদস্যদের মতামত বা ভোটগ্রহণ ছাড়া তার অনুসারী ৩ সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। তাছাড়া সদস্যদের পাশ কাটিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন নিজেই। এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রকাশ্যেই বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনের ভোটার উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এটিপ্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে সদস্যরা তাদের অভিযোগে বলেন, জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০২২ অনুযায়ী জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ/পৌরসভা সমূহের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রগণকে পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদের রাজস্ব ও এডিপি বরাদ্দ স্থানীয় সরকারের ওই সকল চেয়ারম্যান ও মেয়রের অনুকূলে বিভাজন করার কোনো বিধান রাখা হয়নি।