স্বত্ব © 2025 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
মোঃ হাসান লিটন
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণে মো. তারেক (২৩) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে চাচা হাফেজ গংদের বিরুদ্ধে। গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ড হানিফ মিস্ত্রি’র বাড়িতে প্রতিবন্ধী যুবককে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আহত যুবক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিবন্ধী যুবক তারেক ওই বাড়ির মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবক তারেক জানান, রসুলপুর ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ড আমাদের নিজ বাড়িতে এ-র আগে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার মা ও চাচীর সাথে ঝগড়া বিবাদ হলে তার ফয়সাল করার জন্য গত শনিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা আমাদের বাড়ির উঠানে বসেন। এরপর সালিসি শেষের একপর্যায়ে আমার চাচা মো. হাফেজ উত্তেজিত হয়ে আমার গালে থাপ্পর মারেন। কেন আমাকে থাপ্পড় মারলো তা জিজ্ঞেস করা মাত্রই আমার অন্য চাচা ইয়াছিন, অলু, এবং ফুফু ছফুরা, ও রাসেদা একাত্রিত হয়ে ফের আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে আমার মা আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে রওনা হলে পথিমধ্যে তারা আমাকে ও আমার মাকে বাধা দেয়। এরপর ঘটনার একদিন পর শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের ভয়ে পালিয়ে রোববার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। বর্তমানে আমি চিকিৎসাধীন রয়েছি। এসব সততা নিশ্চিত করে আহত যুবকের মা বিনু বেগম জানান, আমার প্রতিবন্ধী ছেলেকে মারধর করার সময় আমি বাধা দেওয়ায় আমাকেও দেবর হাফেজ মারধর করে। এবং আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য নিলে আমাকে দেখিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। বর্তমানে আমার ছেলেকে পালিয়ে নিয়ে এসে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাচ্ছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাফেজ গংদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভাতিজা তারেক আমাদের সাথে অন্যায় করায় তাকে একটা থাপ্পর মারছি। তাবে বড় ভাই সিদ্দিকের স্ত্রী বিনু বেগমকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন তারা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিক বলেন,প্রতিবন্ধী যুবককে মারধর করা তাদের অন্যায় হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ সমাধান করে দিবো। শশীভূষণ থানার(ওসি) মু. এনামুল হক বলেন, প্রতিবন্ধী যুবকে মারধর করে অন্যায় করেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আদিত্য কামাল
আখাউড়ার চাঞ্চল্যকর শরীফ খাঁ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকির খাঁকে (৪০) গ্রেফতার করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রাজধানীর শাহাজাহানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলার অন্য পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মাহবুব খাঁ (৩০) ও গাজী খাঁ (৬৫)। এছাড়া, আমানত খাঁকে (৬৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাঁচ আসামির মধ্যে অন্যতম আমির খাঁ মারা গেছেন। আখাউড়া থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চানপুর গ্রামে ২০১৫ সালের ৬ আগস্টে শরীফ খাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে চাঞ্চল্যকর ওই হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত। হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে পলাতক জাকির খাঁ’কে অবশেষে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলো আখাউড়া থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম জানান, ৮ বছর পর চাঞ্চল্যকর শরীফ খাঁ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জাকির খাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলায় অন্য দুই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আসামিরা শরীফ খাঁকে পারিবারিক ও সম্পত্তিজনিত কারণে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। উল্লেখ্য, গ্রেফতার আসামি জাকিরের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় ১টি মাদক, ১টি নারী শিশু ও ১টি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা রয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানিমুখী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্ধর দিয়ে আবারো শুরু হচ্ছে মাছ রপ্তানী। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বিদেশ থেকে মাছ, শুটকি, মাংস ও ফুড জাতীয় খাদ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারী) থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবোরো মাছ রপ্তানী শুরু হবে। এতে করে বন্দরে পুনরায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে কর্ম চাঞ্চলতা ফিরে আসবে বলে আশা করছে ব্যবসায়ীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানীকারক এসোসিয়েশসের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জানান, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞার ফলে গেল বুধবার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আগরতলায় মাছ রপ্তানী বন্ধ ছিল। এর আওতায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে মাছ রপ্তানীর বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে এলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে টিঠি পাঠানো হয়।চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়, আগরতলা আইসিপিকে যেন এই তালিকার বাইরে রাখা হয়। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মন্ত্রীর সাথে কথা বলে নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে রাজ্যকে বাদ রাখার আহবান জানান। মন্ত্রীর আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।এতে করে গত ৫ দিন বন্ধ থাকার পর আবারো সোমবার থেকে মাছ রপ্তানী শুরু হবে। এতে করে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত শত শত ব্যবসায়ী এই শ্রমিকরা তাদের কর্মসংস্থান ফিরে পাবে।আখাউড়া স্থলবন্দরেরর সুপারিন্টেনডেন্ট মোঃ সামাউল ইসলাম জানান, এই স্থলবন্দরটি রপ্তানি মুখি। বেশির ভাগই মাছ রপ্তানি হয়। কিন্তু ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া খাদ্য নিরাপত্তা জনিত কারন দেখিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত মাছ রপ্তানি বন্ধ রাখেন ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের আলোচনার মাধ্যমে ও রাজ্য সরকারের অনুরোধে ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ফেসাই) এই বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে পুনরায় মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেই। মাছ রপ্তানি শুরু হলে বন্দরে রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতি দিন ৫০ থেকে ৬০ টন মাছ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সহ আশেপাশের সাতটি রাজ্যে রপ্তানি হয়। প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য আড়াই মার্কিন ডলার। প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ডলারের মাছ রপ্তানি হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক -আদিত্য কামাল
ট্রেন যাত্রীদের জানমাল রক্ষা ও রেলপথে নাশকতা রোধে সার্বিক নিরাপত্তা ও নজরদারি জোরদার করেছে র্যাব-৯। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই শ্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এলিট ফোর্স সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেললাইন কেটে ফেলা সহ ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেনের নাশকতা রোধ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে র্যাব-৯ এর আওতাধীন এলাকা সিলেটসহ সিলেট বিভাগের অন্যান্য জেলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রেলস্টেশনগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।এছাড়া রেলস্টেশনগুলোতে নিয়মিতভাবে রোবাষ্ট পেট্রোল পরিচালনা করা হচ্ছে। নাশকতাকারী ও দুষ্কৃতিকারীরা যেন কোন দাহ্য পদার্থ, নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য কিংবা অবৈধ মালামাল (মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র) ইত্যাদি বহন করতে না পারে সেজন্য র্যাব-৯ এর আওতাধীন স্টেশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিভিন্ন সময় ধারাবাহিকভাবে চেকপোস্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তার অংশ হিসেবে রেল স্টেশন এবং বিভিন্ন ট্রেনে র্যাব-৯ এর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কর্তৃক বিভিন্ন সময় সুইপিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।পাশাপাশি যে কোন ধরনের নাশকতা ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্টেশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অত্যন্ত সর্তকতার সাথে র্যাব-৯ কর্তৃক সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সমন্বয় ও তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে ট্রেন যাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে র্যাব-৯ কাজ করে যাচ্ছে। যে কোন সহিংসতা বা নাশকতার বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে বদ্ধপরিকর ।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা পেলেন জনতার খবর এর সম্পাদক- সাংবাদিক আদিত্ব্য কামাল।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনে বৈশাখী শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাকে এ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
বৈশাখী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন এর সঞ্চালনায়, এতে সভাপতিত্ব করেন, আবু নাসের বাহার। প্রধান অতিথি ছিলেন, কবি দেওয়ান মারুফ। উদ্বোধন করেন, মনির হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক- সিলেট বিভাগীয় আবৃত্তি সংগঠন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দ্বীপক চৌধুরী বাপ্পি। সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক- কবি আব্দুল মান্নান সরকার। বীরমুক্তি যোদ্ধা ওয়াছেল সিদ্দিকী। বীরমুক্তি যোদ্ধা আসবারুন নবী মোবারক। মাসিক তিতাস বার্তার সম্পাদক- এম,এ মতিন সানু। সাপ্তাহিক অগ্রধাপ পত্রিকার সম্পাদক- শেখ ফরিদ। পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুক কবির। ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক- আনোয়ার হুসেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া সমিতির সভাপতি এডভোকেট হুমায়ূন কবির। বি আর ডিবি’র চেয়ারম্যান আবু কাউছার। দৈনিক মুক্তির লড়াই এর জেলা প্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদ খোকন। জেলা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম তৌছির। জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের কোচ ও প্রাক্তন কৃতি খেলোয়াড় আতাউর রহমান ইয়াকুব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক- নিছার ভূঁইয়া।
বৈশাখী শিল্পী গোষ্টীর নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে যারা সম্মাননা পদকে ভূষিত হয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসা সেবার অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ কে সম্মাননা পদক। নদী ও প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষায় অবদানে নোঙর সভাপতি মোঃ শামীম আহমেদ, ৭১ এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য বীর মুক্তিযোদ্দা আসরারুন নবী মোবারক, সাহিত্যে ও অভিনয়ে দীর্ঘদিন দরে অবদান রাখার জন্য কবি আঃ মান্নান সরকার, সাংবাদিকতায় এম এ মতিন সানু মাসিক তিতাস বার্তা, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য সাংবাদিক ও কলামিস্ট -আদিত্ব্য কামাল, বিশিষ্ট নারী সংগঠক প্রাউড ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র কর্ণধার কোহিনূর আক্তার প্রিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পীদের সংগঠনে বিশিষ্ট সংগঠক হিসাবে মনোনীত হয়েছেন আনিছুল হক রিপন প্রতিষ্ঠাতা অংকুর শিশু কিশোর সংগঠন, আবৃত্তি শিল্পী এবং আবৃত্তিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য মোঃ হাবিবুর রহমান পারভেজ নির্বাহী সম্পাদক আবরণী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, যন্ত্র সংগীতে বিশেষ অবদানে দিলিপ বণিক তবলা উস্তাদ সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, চিকিৎসা সেবার বিশেষ অবদানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যমুনা হসপিটেল এন্ড ডায়াগনস্টিক এর ব্যবস্হাপনা পরিচালক জুলফিকার আলী ভুট্টো, চিকিৎসা সেবায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া যমুনা হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. ইমরান খান। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বিশিষ্ট সমাজ সেবক সবজুল মুমিন তালুকদার সবুজ।
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
গেলো বছর (২০২৩) কিশোর অপরাধীদের হাতে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত বছরের ৯ জানুয়ারি জেলা শহরে ইজিবাইকের গতিরোধ করে আশিক নামের এক সাংবাদিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ৯ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যার দিকে শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং এর সক্রিয় সদস্য ঘাতক রায়হান আহমেদ সোহানকে জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
নিহত আশিকুর রহমান আশিক ‘দৈনিক পর্যবেক্ষণ’ পত্রিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। আশিক জেলা শহরের মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী আশরাফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় বাতিঘর নামের একটি মানবসেবামূলক সামাজিক সংগঠনের কর্মী ও ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদক বিরোধী আন্দোলন’ এর সভাপতি ছিলেন। এবং জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সিফাত, সৌরভ, তৈয়ব, সাঈফ, রিজু’সহ মাদক বিরোধী প্রচার প্রচারণা চালাতেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম জানান, ‘বেওয়ারিশ লাশ স্বেচ্ছায় দাফন কাজের সঙ্গে জড়িত বাতিঘর নামক সংগঠনের মাসিক সভা ছিল শহরের ফারুকী পার্কে। সেখান থেকে সভা শেষ করে শহরে ফেরার পথে মাদকাসক্ত রায়হান’সহ আরও ৪-৫ জন আশিককে বহনকারী ইজিবাইকের গতিরোধ করে বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গেলো বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে আরাফাত হোসেন (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আরাফাতের পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে আরাফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে জেলা শহরের ট্যাঙ্কের পাড় এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আশুগঞ্জের লালপুর এলাকার সৌদি প্রবাসী নোমানের পরামর্শে ইয়াছিন ও হযরত নামের দুই কিশোর পরিকল্পিতভাবে আরাফাতকে হত্যা করেছে। ঘটনার আগের দিন সকালে আরাফাত জন্মনিবন্ধনের কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন বৃহস্পতিবার রাতে আশুগঞ্জ থানা থেকে আরাফাতের মৃত্যুর বিষয়টি তাদের জানানো হয়।
পরিবারটির দাবি, সৌদি প্রবাসী নোমানের পরামর্শে শরীফপুর এলাকার ইয়াছিন এক তরুণী ও আরফাতকে সঙ্গে নিয়ে আশুগঞ্জে হযরতের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। সেখানে আরাফাতকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়িতে অবস্থানকারী এক তরুণীকে আটক করা হয়।
গেলো বছরের ২৪ মে ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ নেতা ইকরাম আহমেদ খুন হয়েছেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় আরেক ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে রায়হান নামের এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। নিহত ইকরাম সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের মাছুদ আহমেদের ছেলে। তবে ইকরাম পরিবারের সঙ্গে জেলা শহরের কালাইশ্রীপাড়া ডা. ফরিদুল হুদা সড়কের একটি বাড়িতে থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় ইকরাম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রিদওয়ান আনসারির বাসায় ছিলেন। আটক রায়হান ঢাকার মগবাজার এলাকার জিয়াউল হকের ছেলে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দাবি, রায়হান মাদকাসক্ত।
নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মদদ দিচ্ছে। ‘হিরোইজম’ প্রকাশ করতেও পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে। আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, প্রেমের বিরোধ, মাদকসহ নানা অপরাধে কিশোররা খুনাখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় ‘বড় ভাই’রা।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহরে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুনাখুনি, মাদক, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা খুন, ছিনতাই-চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও ইভটিজিং এবং মাদক ব্যবসার মতো অপরাধে বেশি জড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের নিয়ন্ত্রক বা পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় সমাজের কিছু ‘বড় ভাই’ রয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেফতার কিশোরদের দেশের তিনটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবি অপ্রতুল। অধিকাংশ কিশোরই হত্যা, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক, নারী ও শিশু নির্যাতন, পর্নোগ্রাফি, তথ্যপ্রযুক্তি মামলার আসামি।
বর্তমানে কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিদিনই ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, জমিদখল, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ এবং খুন-খারাবি ইত্যাদি অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এদের অত্যাচার নির্যাতনে সমাজ বিষিয়ে উঠেছে। মানুষ অস্বস্তিকর অশান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সমাজের নিরীহ অংশ বিশেষ করে যাদের কোনো প্রভাব প্রতিপত্তি নেই বা প্রভাবশালী মহলের সাথে কোনো ধরনের সম্পর্ক ও যোগাযোগ নেই তাদের আতঙ্কই বেশি। তারা তাদের সহায়-সম্পদ ও উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটায়; কখন কারা জায়গা-জমি দখল করতে আসে বা চাঁদা দাবি করে অথবা স্কুল-কলেজে পড়ুয়া মেয়েটিকে কখন কোন বখাটে বিরক্ত করে বা স্কুলে যাওয়া ছেলেটিকে তাদের গ্যাংয়ের দলে ভিড়িয়ে ফেলে। এ ছাড়া এসব গ্যাংয়ের উৎপাতে পাড়ায় পাড়ায় মারামারি কাটাকাটি তো লেগেই আছে। এই কিশোর গ্যাং সংস্কৃতি বর্তমানে তরুণদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হিরোইজম বা বাহাদুরি, কাঁচা টাকা-পয়সা, মাদকাসক্তি, সাংস্কৃতিক চর্চার নামে সস্তা ছেলে-মেয়েদের অবাধে মেলামেশার তীব্র আকর্ষণ ইত্যাদি হাতছানি দিয়ে ডাকায় দ্রুত এ সমস্ত গ্যাং এবং তাদের সদস্যসংখ্যা বাড়ছে।
ফলে সমাজকে ভেতরে ভেতরে উইপোকার মতো খুবলে খেয়ে ফেলছে এই অশুভ চর্চা। উঠতি বয়সের, স্কুল-কলেজগামী কিশোরদের একটি অংশ লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ওই দিকেই ঝুঁকছে। ফলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুড়ঙ্গের অপরপ্রান্তে জমা হচ্ছে নিকষকালো অন্ধকার। যারা এই জাতিকে আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে তারা যদি এই আগ্রাসী কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির চর্চা করে বেড়ে ওঠে তবে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। সুতরাং আজকের কিশোর গ্যাং কালচার দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শহুরে জীবনের পাড়ায় পাড়ায় কিশোর-তরুণরা প্রথমে ছোট ছোট গ্রুপ করে ‘স্টার বন্ড’, ‘সাইজ কইরা দে’, ‘আমিই বস’ ইত্যাদি উদ্ভট অথচ রোমাঞ্চকর গ্রুপের নামে আড্ডারাজি শুরু করে। ধীরে ধীরে শুরু হয় ছোট ছোট দলগত অপরাধকর্ম ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার বা দলগত সেরা হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া। অন্য দল বা অন্য এলাকার কিশোরদের ওপর প্রভাবশালী হয়ে উঠার এক রোমাঞ্চকর স্বাদ তারা পেয়ে যায় কাউকে মারধর করে বা অপমান করে।
ভিকটিমরাও তখন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে ঘটে যায় খুনের ঘটনা। জড়িত হয়ে পড়ে স্থানীয় নেতারাও। তারা ‘বড় ভাই’ হিসেবে আগলে রাখেন গ্যাংগুলোকে। বিনিময়ে নিজেদের আর্থরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে থাকেন এসব গ্যাংকে। গ্যাংয়ের সদস্যরাও ‘বড় ভাই’দের শেল্টারে থেকে নির্বিঘ্নে করে যায় নানা অপরাধ। ‘বড় ভাই’য়েরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্পর্শ থেকে আগলে রাখে গ্যাংয়ের সদস্যদের। এভাবে একটি কিশোর গ্যাং জন্ম নিয়ে দাপটের সাথে এলাকায় বিস্তার করে ‘অপরাধ সাম্রাজ্য’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, কিশোর গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িতরা পর্যায়ক্রমে আলাদা আলাদা গ্রুপ তৈরি করে। তাদের ড্রেস কোড থাকে, আলাদা হেয়ার স্টাইল থাকে, তাদের চালচলনও ভিন্ন। তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। নানাভাবে তারা অর্থ সংস্থানের চেষ্টা করে। এলাকার কোনো ‘বড় ভাই’র সহযোগী শক্তি হিসেবেও তারা কাজ করে।
সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, কিশোরদের একত্রিত করে কতিপয় ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত করছেন। তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। সহজ ও অল্প খরচে কিশোরদের দিয়ে তারা অপরাধ করানোর সুযোগ নিচ্ছে। অস্ত্রবাজি, মাদক ও হত্যাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তারা কিশোরদের ব্যবহার করে। এছাড়া কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কিশোর গ্যাং তৈরি করছে। এটি হল কিশোর গ্যাং তৈরির একটি দিক। অন্য আরেকটি দিক হল- আমাদের দেশে শিশুদের লালনপালন করার ক্ষেত্রে পরিবারগুলো শিক্ষা, চিকিৎসা এবং অন্যান্য বিষয়ে যথাযথভাবে দায়িত্বপালন করছে না। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরা অপরাধে জড়ায় এমন একটি কথা সমাজে প্রচলিত আছে। এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এখন উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও অপরাধে জড়াচ্ছে। সঠিক ও সুষ্ঠু সামাজিকীকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে কিশোরদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হচ্ছে। এগুলো প্রশমিত না হওয়ায় তারা নানা ধরনের অপরাধে জড়াচ্ছে। এসব কারণ বিশ্লেষণ করে সমাধানের কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কিশোর অপরাধ কমানো সম্ভব নয়।
আরেকটি বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে, তা হচ্ছে কিশোর সংশোধন কেন্দ্র। প্রচলিত আইনে ১৮ বছরের নিচে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদের বড় কোনো শাস্তির পরিবর্তে পাঠানো হচ্ছে গাজীপুরে অবস্থিত কিশোর সংশোধনাগারে। যেসব কিশোরের সংশোধনাগারে নেওয়া হচ্ছে, তাদের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা আছে কি? একজন কিশোর সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে এসে যদি আবার খারাপ অপরাধে জড়িয়েই পড়ে তবে তা আমাদের জন্য চরম ব্যর্থতা। প্রয়োজনে আইন সংস্কার এবং কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা এ দুই বিষয় নিয়েও আমাদের ভাবার অবকাশ থেকে যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উদাসিতা ও রাজনৈতিক বড়ভাইদের তদবির অনেকটা দায়ী বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ।