স্বত্ব © 2024 দৈনিক পত্রিকা |
সম্পাদক ও প্রকাশক: উবায়দুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ জুয়েল মিয়া প্রতিষ্ঠাতা: পি বা লিজন।সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়- পাইকপাড়া,লোকনাথ দিঘীর পাড়,পৌর কমিউনিটি সেন্টার ২য় তলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।দৈনিক পত্রিকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়া দিন।newsdainikpatrika@gmail.com মোবাইল নাম্বার 01751406352,01715958768
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে মানবজাতির কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, আজ আপনাদের সকলের কাছে, বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন,করোনা মহামারি ও জলবায়ু সঙ্কটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য, অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।তিনি বলেন, বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জোরদারকরণ, জাতিসংঘের উপর অর্পিত দায়িত্বসমূহ পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য, এবং বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সমর্থন জানায়।প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ অধিবেশনে প্রদত্ত তাঁর ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য সংকট, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), সন্ত্রাসবাদ এবং সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গেল বারের মত এবারসহ মোট ১৯তম বারের মতো শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।এ বছরের ইউএনজিএ’র মূল প্রতিপাদ্য হলো : ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্বব্যাপী সংহতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্বের লক্ষ্যে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে ত্বরান্বিতকরণ পদক্ষেপ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে বলেন, “আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার পিতা, জাতির পিতা ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার মা, আমার তিন ছোট ভাই, দুই ভ্রাতৃবধূ, চাচাসহ পরিবারের মোট আঠার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল।তিনি ও তাঁর ছোট বোন বিদেশে থাকায় সেই বর্বরতা থেকে বেঁচে যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরআগে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ত্রিশ লাখ দেশবাসীকে হত্যা এবং দুই লাখ নারীকে নির্মম নির্যাতনের কথাও তিনি ভাষণে উল্লেখ করেন।আসুন আমরা রোহিঙ্গাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেননা ইতোমধ্যেই তাদের বাস্তুচ্যুতির ছয় বছর পেরিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু, পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সম্ভাব্য মৌলবাদকে ইন্ধন দিতে পারে।এই অবস্থা চলমান থাকলে এটি আমাদের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলেও আশংকা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ০.৪৭% এরও কম অবদান রাখলেও বাংলাদেশ জলবায়ুজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মারাত্মক হুমকি। এর সমাধানের লক্ষে জরুরি, সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।তিনি বলেন,“আমরা প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলিকে উচ্চাভিলাষী এনডিসি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের উন্নয়ন চাহিদার কথা বিবেচনা করতে হবে। আমরা ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত তহবিলের জরুরি বাস্তবায়ন চাই।সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা, লবণাক্ততা, নদী ক্ষয়, বন্যা ও খরা-জনিত কারণে জলবায়ু-অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বানও জানান তিনি।বাংলাদেশ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং জলবায়ু-সহনশীল টেকসই উন্নয়নের পথ অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ সবুজ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বল্প-কার্বন নির্গমন কৌশল প্রণয়ন করছে। তাঁর সরকারের ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে এই তহবিলে এ পর্যন্ত ৪৮০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছি। জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমনের লক্ষে সমুদ্র উপকূলে বাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার, গ্রিন বেল্ট এবং বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে।বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূত মানুষের জন্য বিশ্বের সবচেয় বড় আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে ৪ হাজার ৪০৯টি উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ১৩৯টি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগ ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার পরিবারের ৫০ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, তাঁর সরকার ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়ন করছে। যার লক্ষ্য সমন্বিত ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি নিরাপদ, জলবায়ু সহনশীল এবং সমৃদ্ধ ডেল্টা অর্জন।প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে একটি জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জলবায়ু সহনশীল দেশে পরিণত হতে কাজ করছি। বাংলাদেশের ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করছে। আমরা আরও টেকসই শক্তির মিশ্রণের জন্য কাজ করছি। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের শক্তির ৪০% পুনঃনবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়া যাবে।আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক স্থাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ অকার্যকর হয় পড়েছে এবং এ ব্যবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও, আমাদের মত দেশগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া, উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের লক্ষ্যে হিমাগার নির্মাণের জন্য আমাদের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমি জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক ‘খাদ্য ব্যাংক’ চালু করার প্রস্তাব করছি। আমাদের অবশ্যই জলবায়ু-সহনশীল ফসলের গবেষণায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।বিগত কয়েক বছরের আন্তঃসংযুক্ত সঙ্কটগুলি বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি এবং পণ্য মূল্য বৃদ্ধি করেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি বিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমরা প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করেছি। আমরা নি¤œ আয়ের ১ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে চাল ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছি।মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং দেশের সকল অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবানের উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০২২ সালে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ গঠন এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য, শক্তি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে বিভিন্নমুখী সমাধান প্রদানের জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।খাদ্যপণ্য রপ্তানি এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সমস্যাসমূহের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করার জন্য এই গ্রুপের অন্যতম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তিনি সব সময় জোর দিয়েছেন বলেও জানান।চলবে…. (সূত্র বাসস)
মোঃ জুয়েল মিয়া
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক এপিএস ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবনের ভরাডুবি হয়েছে। এছাড়া আখাউড়া উপজেলা আ.লীগের ‘ঐক্যের প্রার্থী’ মুরাদ হোসেন এর ও ভরাডুবি হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন ছাইদুর রহমান স্বপন ও মোঃ মনির হোসেন।কসবা উপজেলায় ছাইদুর রহমান স্বপন কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৮৫ হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই, কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও কুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৭ ভোট।উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬ হাজার ৫৫৬ ভোট পেয়ে চশমা প্রতিক নিয়ে বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন কসবা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন তালা প্রতীকে ৪৯ হাজার ১৯১ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাঈদা সুলতানা সুপ্রিয়া নির্বাচিত হয়েছেন। কসবা উপজেলায় মোট ২ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৬ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার ২০২ টি ভোট পড়েছে যা মোট ভোটার সংখ্যার ৪৬.২৭ শতাংশ। ২য় ধাপে এ উপজেলার ৮৩ টি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোঃ মনির হোসেন ঘোড়া প্রতীকে ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মুরাদ হোসেন ভূইয়া আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭৩ ভোট। মুরাদ হোসেন আখাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল এর আস্থাভাজন ছিলেন। তাকে উপজেলা আওয়ামীলীগ ‘ঐক্যের প্রার্থী ’ বলে ঘোষণা দিয়েছিল। আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, মোগড়া ইউপি চেয়ারম্যান এমএ মতিন ও দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন মুরাদ হোসেনকে বিজয়ী করার জন্য বিতর্কিত নানান কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে পৌর মেয়র কাজল ও মোগড়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিনকে অশালীন বক্তব্য দেওয়ায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শোকজ করেছিল এবং দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন কে ভোটের আগের দিন ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ভোটকেন্দ্রে অনৈতিক কাজ ও প্রভাব বিস্তারের কারনে ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ও এমএ মতিন সাধারণ ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী-সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন।উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাইক প্রতীকে ১৫ হাজার ৫৩ ভোট পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জুয়েল রানা টিউবওয়েল প্রতীকে ১১ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কলস প্রতীকে ২০ হাজার ২০৫ ভোট পেয়ে রোকসানা আক্তার নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক পিয়ারা বেগম পিওনা হাঁস প্রতীকে ১১ হাজার ৫৪০ ভোট পেয়েছেন।আখাউড়া উপজেলায় মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৭০ ভোটারের মধ্যে ৪৪ হাজার ১১৬ টি ভোট পড়েছে যা মোট ভোটার সংখ্যার ৩৪.৫০ শতাংশ। ২য় ধাপে এ উপজেলার ৪৬ টি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গড়ে এই দুই উপজেলায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১০-১২ বছরের মধ্যে এমন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট এই দুই উপজেলায় তেমন হয়নি। প্রশাসন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে এমন ভোট গ্রহণ সম্ভব হয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন। একনায়কতন্ত্রের উপজেলা হিসেবে পরিচিত এক শাসকের দীর্ঘদিনের অপশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের জবাব নীরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে আখাউড়া উপজেলার ভোটাররা দিয়েছেন বলে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ভোটের ফলাফল পেয়ে উচ্ছসিত সাধারণ ভোটার ও জনগণ। এছাড়া কসবায় আইনমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান স্বপন চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী জীবন শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। এর ফলে কসবা ও আখাউড়া উপজেলার রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সূচনা হবে বলে সুশীল সমাজের লোকজন ধারণা করছেন। ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান ও তাদের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। অবৈধভাবে জোরপূর্বক ভোট ছাপানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি। জাল ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি কেউ। যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রকৃত ভোটাররা ভোট দিয়েছে। গতকাল ২১ মে নির্বাচন পরিদর্শনে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে কসবা ও আখাউড়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা হয়েছে। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে আসে সেই অবস্থা তৈরি করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য আমরা যে অঙ্গীকারাবদ্ধ নির্বাচন কমিশনের যেই নির্দেশনা সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারব। এবং এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অবাধ হবে।’ এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।এবার অংশ্রগ্রহণকারী ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪০৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৬ জন।এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। এর মধ্যে ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৯৮ হাজার ৬১৪ জন। আজ সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ২০২৩ সালের এসএসসির ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।পরে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমারাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মোট ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ২২০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭০ হাজার ৯৭৫ জন এবং ছাত্রী ৮৮ হাজার ২৪৫ জন। মোট পাস করেছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ জন। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭১জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৬ হাজার ৩৭৫ জন।এদিকে,মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট অংশগ্রহণকারী ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ১২ হাজার ৯৬৪ জন। ছাত্র ১ লাখ ৯৫০ জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ১২ হাজার ১৪ জন। পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ১৮৮ জন এবং ছাত্রী ৩ হাজার ২৫ জন।অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৪৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৯ হাজার ৩৮৩ জন এবং ছাত্রী ২৬ হাজার ৩৪৭ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৪৫ জন। ছাত্র ১০ হাজার ৮০১ জন এবং ছাত্রী ৭ হাজার ৩৪৪ জন।এবছর সকল শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৪৮ হাজার ৩৩২ জন ছাত্রী বেশী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৩ হাজার ৬৫০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৯ টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৯০ হাজার ৩০৪ জন বেশী ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৭ হাজার ২৭০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। বিদেশী অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৭৫ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৩২০ জন, পাসের হার শতকরা ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৫ জন।ছাড়া মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৭৫ টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২১ টি।অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিগত বছরগুলোর মতো এবারো সম্পূর্ণ পেপারলেস ফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সরাসরি মোবাইল ফোনে ফল প্রাপ্তীর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়,বোর্ডসমূহ,জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্রমশ উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী,কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: কামাল হোসেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানসহ সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল তিনভাবে জানতে পারবেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট থেকে তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সহজেই ফলাফল জানতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট educationboardresults.gov.bd এ সহযোগিতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে রেজাল্ট শিট (ফুল মার্কসশিট) ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমেও ফলাফল জানতে পারবে।
আবার, মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে ইংরেজিতে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর দিতে হবে। এরপর আবারও স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হয়। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী। এ বছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি। এরমধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে কেন্দ্র ২ হাজার ২৪৪ টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ হাজার ৭৮৬টি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৭১৬টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৮৫টি। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে মোট কেন্দ্র ৮৫০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৯২৭টি। এবার মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবছর পূর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পূর্ণ । সূত্র বাসস
জুয়েল মিয়া
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর উন্নয়ন ও সরাইল-ধরখার-আখাউড়া বন্দর পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। সোমবার(২৪জুলাই) দুপুরে প্রকল্প পরিদর্শনে এসে প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘প্রকল্পটি আমাদের দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ করবে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ’আজ এখানে এসেছি ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের মাধ্যমে চার লেনের জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের কাজের গতিবিধি কেমন চলছে দেখার জন্য। প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে আমাদের আরও কি করণীয়, এই পরিদর্শনে সহজে বুঝতে পারব। সামনের দিনগুলোতে আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে বিবেচনায় আমরা চেষ্টা করছি প্রকল্পের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে।’ তিনি আরও বলেন, ’আমি খুবই খুশি, এখানকার সাধারণ মানুষজন খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা করেছেন; যেন আমরা প্রকল্পের কাজ সুন্দরভাবে শেষ করতে পারি।’ প্রকল্প পরিদর্শনের সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।এর আগে দুপুরে ভারতীয় হাইকমিশনার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর হয়ে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দরে এসে পৌঁছান। এ সময় আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মতিঝিলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মচারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, গৌতম ভট্টাচার্য, হাবিবুর রহমান, পরিতোষ মন্ডল ও মো. এসকেন আলী খান। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা, ৪টি মোবাইল, দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের ১টি খাম ও দুদকের একটি নোটিশ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে গৌতম ভট্টাচার্য দুদকের ডিজি মানি লন্ডারিং-এর পিএ হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। গ্রেফতার এসকেন আলী খান চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য, তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। অপর দু’জন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। তারা বিভিন্ন প্রতারণার সাথে জড়িত বলে জানা যায়।শুক্রবার সকালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের স্পেশাল অপারেশন টিম তাদের গ্রেফতার করে।শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।তিনি বলেন, গত ২০ জুন সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকার ব্যবসায়ি আশিকুজ্জামানের উত্তরার বাসায় দুদকের মনোগ্রাম সম্বলিত খাকি রঙের খামে ১টি নোটিশ নিয়ে একজন অফিসার হাজির হয়। কার্পেটের ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণের চোরাচালান এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন আশিকুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ শুনে ভয় পেয়ে যান আশিকুজ্জামান। তখন দুদকের সে অফিসার আশিকুজ্জামানকে একটু সহানুভূতি দেখানোর ভান করে তাকে মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ডিবি, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক এবং এনএসআই দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে খুঁজছে বলেও ভয় দেখানো হয়। দুদকেও তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, এরপর চক্রটি ভুক্তভোগীকে মিষ্টির প্যাকেটে টাকা নিয়ে মতিঝিলের একটি হোটেলে আসতে বলে। এ বিষয়ে আগে থেকে গোয়েন্দা নজরদারি চালাচ্ছিল গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। পরে দাবি করা টাকা নিতে হোটেলে আসলে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি স্পেশাল অপারেশন টিম।
তিনি বলেন, মূলহোতা গৌতম ভট্টাচার্য কর্ম সূত্রেই জানে কিভাবে মানুষকে দুর্নীতি সংক্রান্ত নোটিশ পাঠাতে হয়। কিভাবে তাদের কাছ থেকে আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক ব্যাখ্যা নেয়া হয় এবং কিভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সে তার দুষ্কর্মের সহযোগীদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও চাকুরীজীবীকে টার্গেট করতো। তাদের ব্যক্তিগত নানা তথ্য সংগ্রহ করে দুদকের চিঠির খামে, প্যাড ও ফরমেট ব্যবহার করে অভিযোগের নোটিশ পাঠাতো। পরবর্তীতে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দান ও সমঝোতার নামে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিত চক্রটি।গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্রঃ ঢাকা, বাসস